...
সোমবার, মে ২০, ২০২৪

আত্মশুদ্ধি করা ছিল রসুলের দায়িত্ব

যা যা মিস করেছেন

মানবতার মুক্তিদূত মহানবী (সা.) এ ধরায় আবির্ভূত হয়েছিলেন মানব- কল্যাণের জন্য। দিশাহারা মানব জাতিকে আলোর পথ দেখানোর জন্য। তিনি প্রেরিত হয়েছিলেন অশান্ত এ বিশ্বে শান্তি ধারা প্রবাহিত করার জন্য। তাঁর ২৩ বছরের অন্যতম কর্মসূচি ছিল মানব জাতিকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে পূতপবিত্র করে তাদের আল্লাহর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করা।

মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘আল্লাহ মুমিনদের প্রতি অবশ্যই অনুগ্রহ করেছেন, তিনি তাদের মধ্য থেকে তাদের জন্য একজন রসুল পাঠিয়েছেন। যে তাঁর আয়াতগুলো তাদের কাছে তিলাওয়াত করে, তাদের পরিশুদ্ধ করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়, যদিও তারা আগে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে ছিল।’ সুরা আলে ইমরান আয়াত ১৬৪।
উপরোল্লিখিত আয়াতে আল্লাহতায়ালা রসুলুল্লাহ (সা.)-এর তিনটি মহান দায়িত্বের বিবরণ দিয়েছেন। এক. মুমিনদের কাছে কোরআন তিলাওয়াত করা। দুই. তাদের পরিশুদ্ধ বা তাদের আত্মশুদ্ধি করা। তিন. তাদের কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেওয়া। আত্মশুদ্ধি বলতে অন্তর পবিত্র করা। অন্তর থেকে সব ধরনের মন্দ স্বভাব মুছে ফেলার নাম আত্মশুদ্ধি।

মানুষের অন্তরের অন্যতম স্বভাব হচ্ছে লোভলালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা-অহংকার পরনিন্দা ইত্যাদি। আর ভালো স্বভাব হচ্ছে তার নিষ্ঠা, মানবতা, ধৈর্য, সহনশীলতা ও খোদাভীরুতা ইত্যাদি। দুই ধরনের স্বভাব গ্রহণ করার যোগ্যতা দিয়েই আল্লাহ মানব সৃষ্টি করেছেন। সুরা আশ শামস আয়াত ৮।

জীবিত মানুষের পরিচয় হিসেবে দুটি জিনিস উল্লেখযোগ্য- দেহ ও আত্মা। দেহ অসুস্থ হলে শারীরিক চিকিৎসা ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে তা বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞানের যুগে বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে আত্মার রোগের চিকিৎসার জন্য এ রোগের বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার ও তাদের সান্নিধ্য অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রশ্ন। বলা বাহুল্য, শারীরিকভাবে কেউ অসুস্থ হলে সে শুধু নিজে ধ্বংস হবে। আর আত্মিক রোগে কেউ আক্রান্ত হলে গোটা পরিবার, সমাজ ও দেশ ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া আত্মা পরিষ্কার না হলে আমলে আগ্রহ হয় না, আল্লাহর কাছে এর পরিপূর্ণ গ্রহণযোগ্যতা হয় না। তাই আল্লাহতায়ালা মহানবী (সা.)-কে আত্মশুদ্ধির মহান দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেছিলেন। মহান আল্লাহ কোনো বিষয়ে দৃঢ়তা বোঝানোর জন্য সাতবার শপথ করেননি।

শুধু আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব বোঝানোর জন্য তিনি সাতটি জিনিসের শপথ করে বলেন, ‘সে-ই নিজেকে শুদ্ধ করবে যে সফলকাম হবে এবং সে-ই ব্যর্থ হবে যে নিজেকে কলুষিত করবে।’ সুরা আশ শামস আয়াত ৯-১০)।

মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘অবশ্য অবশ্যই মানবদেহে একটি মাংসপি- আছে, তা সুস্থ থাকলে গোটা দেহ সুস্থ থাকে, তা হলো আত্মা।’ ইবনে হিব্বান। প্রতিটি মানুষের আত্মা সংশোধন হলে গোটা সমাজ আদর্শ সমাজে পরিণত হবে। তাই হিংসা নিন্দা ও শত বছর যাবৎ হানাহানি মারামারিতে বিপর্যস্ত একটি জাতিকে মহানবী (সা.) মাত্র ২৩ বছরের স্বল্পসময়ে মানবাত্মার যথার্থ পরিশুদ্ধি এবং ঐশী বিধানের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আদর্শ জাতিরূপে গড়ে তুলেছিলেন। যাদের ইতিহাসে অন্যায় নেই, অবিচার নেই। নেই জুলুম অত্যাচার, শোষণ ও প্রতিশোধের মতো জঘন্য অপরাধপ্রবণতা।

সাহাবিরা রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্যে আত্মশুদ্ধি অর্জন করেছিলেন। আর তাবেয়িরা তা গ্রহণ করেছেন সাহাবিদের থেকে। পর্যায়ক্রমে তা এভাবেই চলে আসছে। তাই প্রত্যেকেই নিজের আত্মশুদ্ধির লক্ষ্যে আদর্শবান আত্মশুদ্ধিপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ আল্লাহর কোনো ওলির সান্নিধ্যে গিয়ে আত্মশুদ্ধি প্রয়োজন। একটি সুন্দর সুশৃঙ্খল ও শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণের জন্য এবং পথহারা জাতিকে আদর্শ মানুষ উপহার দেওয়ার জন্য আত্মশুদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণের বিকল্প নেই। নেই আত্মশুদ্ধিপ্রাপ্ত আল্লাহর অভিজ্ঞ ওলিদের সান্নিধ্য অর্জন ছাড়া কোনো উপায়।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.