কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন: নেত্রকোনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে ঠিকাদারকে টেন্ডারে কাজ পাইয়ে দিতে ঘুষ নেওয়ার গায়েবী অভিযোগ দাখিল করে বিভিন্ন হোয়াটস অ্যাপ নাম্বারে প্রচার করছেন জনৈক ব্যক্তি। বিভিন্ন হোয়াটস অ্যাপ নাম্বারে অভিযোগের কপি এবং সোনালী ব্যাংক নেত্রকোনা শাখা হতে সোনালী ব্যাংক ঢাকা বুয়েট শাখায় গত ৩ এপ্রিলে জমাকৃত তিন লক্ষ টাকার জমা শ্লিপ প্রচার করছেন।
অভিযোগকারী হাজী আব্দুল ওয়াহাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত আবেদনে জানান, তিনি একজন তৃতীয় সারির ঠিকাদার এবং তিনি মোহনগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তিনি নেত্রকোনার মদন ও খালিয়াজুরী উপজেলার ৩০টি ওয়াসব্লক মেরামত কাজের টেন্ডার পেতে নেত্রকোনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মশিউর রহমানের ব্যাংক একাউন্টে সোনালী ব্যাংক নেত্রকোনা শাখা হতে ঢাকা বুয়েট শাখায় গত ৩ এপ্রিল তিন লক্ষ টাকা জমা প্রদান করেন। টাকা নিয়ে তিনি উক্ত কাজ না দেওয়ায় গত ২৩ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগকারীর আবেদনে উল্লেখিত মোবাইল (০১৮১৫৩০০৩৯০) নাম্বারে যোগাযোগের জন্য চেষ্টা করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদের লিংক উল্লেখিত মোবাইল (০১৮১৫৩০০৩৯০) নাম্বারের হোয়াটস অ্যাপ থেকে পাঠালেও তিনি হোয়াটস অ্যাপেও ফোন ধরেন না এবং মোবাইলে সরাসরি ফোন করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ০১৮১৫৩০০৩৯ নম্বরের রবি‘র সিমটি ২২ বছর বয়সি এক নারীর নামে রেজিষ্ট্রেশন করা। ওই নারীর বর্তমান ঠিকানা মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া এবং কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার চর নন্দনপুর এলাকা স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য নেত্রকোনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, হাজী আব্দুল ওয়াহাব নামে কোনো ঠিকাদার জনস্বাস্থ্য কার্যালয়ের কাজ করেন না।
সোনালী ব্যাংক নেত্রকোনা শাখা সূত্রে জানা যায়, গত ৩ এপ্রিল জনাব মশিউর রহমানের হিসাব নাম্বারে তিন লক্ষ টাকা জমাকৃত ব্যক্তির নাম মো. সজিব মিয়া। তিনি জনস্বাস্থ্য নেত্রকোনা কার্যালয়ের হিসাব সহকারী হিসাবে কর্মরত আছেন।
হিসাব সহকারী মো. সজিব মিয়া টাকা জমা দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ৩ এপ্রিল মশিউর রহমানের হিসাব নাম্বারে জমাকৃত টাকার কস্ট মেমো এবং বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত কস্ট মেমো একই। তিনি ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে অফিসে এসে নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মশিউর রহমানের নিকট কস্ট মেমো জমা দিয়েছিলেন। উল্লেখিত কস্ট মেমোতে তার স্বাক্ষর রয়েছে।
নেত্রকোনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মশিউর রহমান জানান, আমার ব্যক্তিগত টাকা হিসাব সহকারী সজিব মিয়ার মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলাম। টাকা জমা দিয়ে সজিব অফিসে এসে জমা রশিদ অথাৎ কস্ট মেমো আমাকে দেন। আমি উক্ত কস্ট মেমো আমার ম্যানিব্যাগে রেখে দেই। ম্যানিব্যাগটি টেবিলে রেখে পাশের রুমে আসরের নামাজ আদায় করি। এমন সময় কে বা কাহারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ম্যানিব্যাগ থেকে কস্ট মেমো বের করে মোবাইল ফোনে ছবি ধারন করে কস্ট মেমোটি আবার যথাস্থানে রেখে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগটি তদন্তকাজে অভিযোগকারীকে সহায়তার তিনি আহবান জানান। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যে কোন শাস্তি গ্রহণে তিনি সম্মতি জ্ঞাপন করে বলেন, অযথা মিথ্যাচার করে তার ব্যক্তিগত সম্মানহানী এবং জনস্বাস্থ্য নেত্রকোনা কার্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করা হচ্ছে। অভিযোগকারীর পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা বের করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি তিনি অনুরোধ জানান।