বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১১, ২০২৪

উধম-বিতর্কে উত্তপ্ত ইন্ডাস্ট্রি

যা যা মিস করেছেন

আগামী অস্কারের (২০২২)-এর আন্তর্জাতিক বিভাগের জন্য ভারত থেকে অফিশিয়াল এন্ট্রি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে পি এস বিনোতরাজের তামিল ছবি ‘কুঝঙ্গল’কে। গত শনিবার জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান পরিচালক শাজি এন করুন কলকাতায় আয়োজিত সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। চোদ্দোটি ছবির দৌড়ে ছিল সুজিত সরকারের ‘সর্দার উধম’ এবং অমিত মসুরকরের ‘শেরনি’-ও। ‘সর্দার উধম’-এর বিবেচিত না হওয়া নিয়ে জুরি বোর্ডের অন্যতম সদস্য সঙ্গীত পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘সুজিতের ছবিটি জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে। ছবিটি বেশ দীর্ঘ। ছবিতে যে ব্রিটিশ বিদ্বেষ দেখানো হয়েছে, তা বিশ্বায়নের যুগে কাম্য নয়।’’ ইন্দ্রদীপের এই মন্তব্যটিকে ঘিরেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। উঠছে প্রশ্নও। তবে কি এই কারণেই বাদ পড়েছে ‘সর্দার উধম’?

জুরি বোর্ডের অন্যতম সদস্য অভিনেত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘ইন্দ্রদীপদা যা বলেছেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত মত। জুরিতে এরকম কোনও আলোচনা হয়নি। গল্প বলা, চিত্রনাট্য, ক্যামেরার কাজ এবং আরও অন্য বিভাগে ‘কুঝঙ্গল’কে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেটা সর্বসম্মত ভাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত।’’

ফিল্ম ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার ভাইস-প্রেসিডেন্ট ফিরদৌসুল হাসানের বক্তব্য, ‘‘বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। এতে কোনও বিতর্ক নেই। ‘সর্দার উধম’ ছাড়া অন্যান্য ছবিগুলো নিয়ে তো প্রশ্ন উঠছে না। বাকি ছবিগুলো কি মানুষ দেখেছেন? তবে এটাও ঠিক, জুরির কোনও সদস্যের এমন কিছু বলা উচিত নয়।’’ ইন্দ্রদীপের সঙ্গে আনন্দ প্লাস বুধবার যোগাযোগ করলে, তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে বরাবরই জনমানসে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তবে জুরির সিদ্ধান্তকেই মান্যতা দিয়েছেন পরিচালক সুজিত। ‘‘যে ছবিটি নির্বাচিত হয়েছে, সেটা সম্পর্কেও জানি। আমার ছবি নিয়ে যা বলা হয়েছে, সেটা ব্যক্তিগত মত। আমার তা নিয়ে কিছু বলার নেই।’’

ইন্দ্রদীপের পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সহমত নন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এবং অনিকেত চট্টোপাধ্যায়। কমলেশ্বরের মতে, ‘‘ছবিতে স্পষ্ট ভাবে দেখানো হয়েছে, ব্যক্তিগত ক্রোধ, জাতিগত বিদ্বেষের কারণে হত্যাকাণ্ড হয়নি। তখনকার কমিউনিস্টদের কথাও যদি বলি, তাঁরা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিপ্লবে বিশ্বাসী ছিলেন। ব্রিটিশদের প্রতি কোনও বিদ্বেষ তার মূলে ছিল না।’’ অনিকেত বলেছেন, ‘‘কেউ যদি বলে থাকে ছবিতে ব্রিটিশদের উপরে ঘৃণা দর্শানো হয়েছে, তা হলে সে মূর্খের মতো কথা বলেছে। ব্রিটিশেরা জালিয়ানওয়ালাবাগে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল। তারা আমাদের দেশকে লুটে নিয়ে গিয়েছে। কোনওটাই মিথ্যে নয়।’’

‘সর্দার উধম’ কতটা তথ্যনিষ্ঠ ছবি, তা অন্য প্রশ্ন। কিন্তু অস্কারে এই ছবি কি জায়গা পেতে পারত? সেই প্রশ্নে অনিকেত এবং কমলেশ্বরের ভিন্ন মত। অনিকেতের বক্তব্য, ‘‘ভুল তথ্যে ভরা কোনও ছবিকে বোধহয় অস্কারের মঞ্চে পাঠানো উচিত নয়।’’ কিন্তু কমলেশ্বর বলছেন, ‘‘অন্য ছবিগুলি দেখিনি, তাই ‘সর্দার উধম’ সেরার সেরা কি না বলতে পারব না। তবে অস্কারে যাওয়ার মতো সম্ভাবনা ছিল ছবিটির। এমন পরিচালনা এবং সিনেম্যাটোগ্রাফি দীর্ঘদিন দেখিনি!’’

‘সর্দার উধম’ নিয়ে দর্শকের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে যে কোনও নির্বাচনের ক্ষেত্রে জুরি বোর্ডই শেষ কথা। এ ক্ষেত্রেও তাই।

সূত্র: আনন্দ বাজার

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security