চীনের উহানের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের নিয়ে করা সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, কভিড থেকে ঘরে ফেরা লোকদের ৪২ শতাংশের জীবাণু দ্বারা রক্তের কার্যক্ষমতা নষ্ট হওয়া (সেপসিস), ৩ শতাংশের শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, ১২ শতাংশের হার্টের নানা সমস্যা এবং ৯ শতাংশের রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা ছিল। শারীরিক দুর্বলতাসহ অন্যান্য জটিলতাও ছিল বেশির ভাগ রোগীর।
ডাব্লিউএইচও জানিয়েছে, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হবে না—এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আবার একবার সংক্রমিত হলে মানুষের দেহে ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা (অ্যান্টিবডি) তৈরি হয় বটে, তবে কিছু লোকের ক্ষেত্রে তা ঘটে না।
ঢাকার মীরবাগের ৬৫ বছর বয়সী ব্যবসায়ী আজহারুল হক করোনায় আক্রান্ত হন জুনের শুরুতে। প্রথমে জ্বর, কাশি ও মুখে রুচি না থাকার উপসর্গ থাকলেও একপর্যায়ে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তাঁকে দ্রুত ভর্তি করা হয় করোনা ডেডিকেটেড এক সরকারি হাসপাতালে। সেখানে একটানা ১৫ দিন থাকার পর ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই দফায় নেগেটিভ রিপোর্ট পেয়ে বাসায় ফেরেন তিনি; পরিবারের লোকজন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। নিজেকে করোনামুক্ত মনে হলেও সপ্তাহখানেক পরই দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট, কাশি, শারীরিক দুর্বলতা, পাতলা পায়খানাসহ নানা উপসর্গ। একপর্যায়ে অবস্থা গুরুতর হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান আজহারুল।
স্পেনের ন্যাশনাল বায়োটেকনোলজি সেন্টারের তথ্য মতে, একবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এমন লোকদের ১৪ শতাংশের ক্ষেত্রে পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে; যদিও তারা এটিকে দ্বিতীয়বার সংক্রমণ বলছে না। তাদের মতে, ভাইরাসটি হয়তো দেহের কোথাও লুকিয়ে ছিল এবং তা হয়তো আবার ফিরে এসেছে। তবে করোনাভাইরাস যে এত তাড়াতাড়ি তার লুকানো অবস্থান থেকে বেরিয়ে এসে আবার আঘাত হানতে পারে—এটিই বিস্মিত করছে বিজ্ঞানীদের।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও ইউজিসির অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে কভিডে আক্রান্ত গুরুতর রোগীরাই শুধু নয়, মাঝারি এবং মৃদু পর্যায়ের করোনা রোগীদের দেহও বেশ দুর্বল এবং ক্লান্ত্ত থাকতে পারে কিছুদিন। তবে আগে থেকে যারা অন্যান্য রোগে, যেমন—স্ট্রোক, হৃদেরাগ, কিডনি রোগ, লিভার, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছিলেন, করোনার অব্যবহিত পরে তাদের ঝুঁকি একটু বেশি থাকে। বিশেষ করে বয়স্কদের সমস্যা বাড়তে পারে। তিনি বলেন, এসব নিয়ে চিন্তার তেমন কারণ নেই। এ সময় দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই মূল ভরসা। এটি বজায় রাখতে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুমের পাশাপাশি হালকা শারীরিক ব্যায়াম করা দরকার। এর পরও জটিলতা না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু ওষুধ সেবন করা দরকার।
কভিডে সেরে উঠেও জটিলতা
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।
প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।