বাংলাদেশে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্ততর ও আইইডিসিআর যথাযথভাবে কাজ করছে জানিয়ে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা চিকিৎসা সরকারিভাবে করা হচ্ছে এবং দেশের সব জায়গায় এখন করোনা নমুনা পরীক্ষা চলছে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশনে পাবনা- ৪ আসনে প্রয়াত এমপি শামসুর রহমান শরিফের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রস্তাব ওপর আলোচনাকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, করোনার নমুনা সংগ্রহ শুরু থেকে সব চিকিৎসা খরচ সরকারিভাবে আমরা করে যাচ্ছি। এখানে পরীক্ষা করা থেকে শুরু করে চিকিৎসা পর্যন্ত কোনো টাকা পয়সা নেওয়া হয় না। সব ধরনের খরচ সরকার বহন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে সারা বিশ্বে করোনা পরিস্থিতিতে আমরা সংক্ষিপ্ত আকারে অধিবেশন বসাচ্ছি। এটি একটা বিশেষ অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। কনোনাভাইরাস সারা বিশ্বের মানুষকে বন্দি করে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আমার কাছে দেশের মানুষের কল্যাণটাই সব থেকে বড়। সেজন্য উৎসবটা সেভাবে করিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দেশে যেন খাদ্য ঘাটতি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখছে সরকার। বর্তমানে ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ড দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আরও ৫০ লাখ লোককে রেশন কার্ড দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, রেশন কার্ডটি বাস্তবায়ন হলে এক কোটি লোক খাদ্য সহায়তা পাবেন। আর এই এক কোটি লোকের পরিবারের সংখ্যা যদি পাঁচজন হয়, তাহলে পাঁচ কোটি লোক খাদ্য সহায়তার আওতায় আসবে।
সংসদ নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশে করোনা আসার সম্ভাবনা দেখতে পেয়েই আমরা বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআর যথাযথভাবে কাজ করছে। করোনা চিকিৎসা সরকারিভাবে করা হচ্ছে। দেশের সব জায়গায় এখন করোনা নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের করোনা পরিস্থিতির তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত (১৮ এপ্রিল) সারা বিশ্ব মোট আক্রান্ত ২২ লাখ ৫২ হাজার ২৮ জন। মৃত্যুবরণ করেছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭২৬ আর সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৯৫৬ জন। বাংলাদেরশ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ১৪৪ জন। মৃত্যুবরণ করেছে ৮৪ আর সুস্থ হয়েছে ৬৬ জন।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রত্যেকটা জায়গায় বিশেষ করে স্থলবন্দর, নৌ-বন্দর, বিমানবন্দরসহ সবখানে পরীক্ষা করার জন্য থার্মালস্ক্যানার ও ইনফারেড থার্মোমিটারের মাধ্যমে স্কিনিং করা শুরু করেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে সব সেক্টরকে অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় কমিটি করে দিয়েছি। করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সংস্থা থেকে সহায়তা করা হচ্ছে। ইউকেএইড, ইউএসএইডসহ বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে।
তিনি বলেন, করোনার নমুনা সংগ্রহে কীটের ঘাটতি নেই। এ পর্যন্ত আমরা ৯২ হাজার পরীক্ষার কীট সংগ্রহ করেছি। এরমধ্যে ২০ হাজার বিতরণ এবং ৭২ হাজারের মতো মজুত রাখা হয়েছে। কীট সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। কাজেই কীটের অভাব হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।
এর আগে বিকেল ৫টায় সংক্ষিপ্ত পরিসরে ও সীমিত সংখ্যক সদস্য নিয়ে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। বিকেল ৫টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টায় মাগরিবের নামাজের বিরতিতে শেষ হয় এ অধিবেশন।