সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধ করে রোহিঙ্গা সঙ্কট অবসানের ‘শেষ একটি সুযোগ’ মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির সামনে রয়েছে বলে মনে করছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘের সারাধণ অধিবেশন সামনে রেখে বিবিসির হার্ডটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সু চি এখনও সাড়া দিতে ব্যর্থ হলে তা ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ডেকে আনবে।
গত ২৪ অগাস্ট রাখাইন রাজ্যে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে হামলার পর শুরু হওয়া ওই সেনা অভিযানে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক হারে হত্যা-ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
জাতিসংঘে চলতি সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে জাতিসংঘের মহাসচিব বিবিসিকে বলেন, মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণটিকে সু চি সেনাদের সাঁড়াশি অভিযান বন্ধ করে রোহিঙ্গা সংকটের অবসানের শেষ সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন।
গুতেরেস বলেন, ‘যদি তিনি (সু চি) এখনই পরিস্থিতি পাল্টানোর উদ্যোগ না নেন, তবে আমি মনে করে চলমান ট্রাজেডি একেবারে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করবে। আর তা হলে ভবিষ্যতে কী করে এর সমাধান সম্ভব হবে সে উপায় আমি দেখছি না’।
সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নে যেসকল রোহিঙ্গা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে, তাদের নিজেদের ঘরে ফেরার সুযোগ দিতে আবারও আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
আন্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘ মহাসচিব হওয়ার পর ১৯ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মত জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে মিলিত হচ্ছেন বিশ্বনেতারা।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল কারণগুলো তুলে ধরে সেখানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরা হবে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের কথাও সেখানে থাকবে।
দীর্ঘদিন সেনা শাসনের মধ্যে গৃহবন্দি জীবন কাটিয়ে নোবেল পাওয়া সু চির দল এনএলডি এখন মিয়ানমারের ক্ষমতায়। রাখাইনে সেনা নিপীড়ন বন্ধের পদক্ষেপ না নেওয়ায় পশ্চিমা মিত্রদের কাছেও তিনি এখন সমালোচিত হচ্ছেন।
রাখাইনের অভিযান নিয়ে ‘ভুয়া খবর’ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে আসছে বলেও অভিযোগ করেছেন সু চি। তিনি এবার জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন না বলেও তার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।