এক সপ্তাহ পর মুখ খুলেছেন বিরাট কোহলি। গত বুধবার তাঁকে সরিয়ে রোহিত শর্মাকে ভারতের ওয়ানডে দলেরও অধিনায়ক করার ঘোষণা দেয় ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই), এরপর আজ আরেক বুধবারে সেটি নিয়ে কথা বলেছেন কোহলি। অবশ্য রোহিতকে অধিনায়ক করা নিয়ে কিছু বলেননি, কোহলি শুধু উত্তর দিয়েছেন এই কদিনে তাঁর অধিনায়কত্ব যাওয়া এবং এ নিয়ে চলতে থাকা গুঞ্জন নিয়ে প্রশ্নের।তবে এর মধ্যে একটি প্রশ্নে বেশ বিরক্তই হয়েছেন কোহলি। প্রশ্নটা যখন হয়েছে রোহিতের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব নিয়ে নিয়ত সংবাদমাধ্যম মাতিয়ে রাখা গুঞ্জন নিয়ে।
রোহিত আর কোহলির মধ্যে দ্বন্দ্বের গুঞ্জনের বয়স অবশ্য এই সাত দিন নয়, গুঞ্জনটা তৈরি হয়েছে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর। শিরোপার সবচেয়ে বড় দাবিদারদের একটি হয়ে বিশ্বকাপে গিয়ে সেবার সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে ইংল্যান্ড থেকে বাড়ি ফেরে ভারত। গ্রুপ পর্ব থেকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত পথচলায় ভারতের পারফরম্যান্সও খুব একটা দাপুটে ছিল না। তা বিশ্বকাপের পর হঠাৎ শোনা যায়, সে সময়ের অধিনায়ক কোহলির সঙ্গে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে রোহিতের।এরপর দুই বছর কেটে গেছে, ভারত দ্বিপক্ষীয় অনেক সিরিজ জিতেছে, কিন্তু আরেকটি বিশ্বকাপ আসতেই আবার মুখ থুবড়ে পড়েছে। গত মাসে শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বিদায় নিয়েছে সুপার টুয়েলভ পর্ব থেকেই। এরপর স্বেচ্ছায় টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা কোহলি বিশ্বকাপের আগেই দিয়ে রেখেছিলেন, সেখানে তাঁর জায়গায় রোহিতকে অধিনায়ক করে বিসিসিআই। এবার ওয়ানডের অধিনায়কত্বেও রোহিত এলেন কোহলির জায়গায়।
গুঞ্জন ডালপালা মেলতে আর কী লাগে! ভারতের ক্রিকেটে ‘ক্ষমতার পালাবদল’ বলে কথা! আজ কোহলির সংবাদ সম্মেলনে তাই সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের নতুন অধিনায়কের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্বের গুঞ্জন নিয়ে প্রশ্ন আসা হয়তো অনুমিতই ছিল।
তবে প্রশ্নটা এর আগেও অনেকবার শোনা কোহলি এবার যারপরনাই বিরক্ত, ‘আমার এবং রোহিত শর্মার মধ্যে কোনো ঝামেলা নেই। দুই বছর ধরে ব্যাপারটা পরিষ্কারভাবে বলে আসছি। ক্লান্ত হয়ে গেলাম উত্তরটা দিতে দিতে! আরেকটা কথা বলে দিতে চাই, আমার কোনো কাজ বা কোনো সিদ্ধান্ত কখনো দলের ক্ষতি করার চিন্তা থেকে হবে না।’
দলের জন্য ভালো হয়, এমন সবকিছুতে রোহিতের পাশেই থাকবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই মুহূর্তে শুধুই ভারতের টেস্ট অধিনায়ক কোহলি, ‘আমার দায়িত্ব দলকে সঠিক দিকে চালিয়ে নেওয়া। রোহিত খুবই দক্ষ একজন অধিনায়ক, কৌশলগত দিক থেকেও অনেক নিখুঁত। রাহুল ভাইয়ের (ভারতের নতুন কোচ রাহুল দ্রাবিড়) মতো অন্যদের সামলানোয় অসাধারণ একজন মানুষের সঙ্গে মিলে সে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যই ঠিক করুক, তারা দুজনই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে আমার শতভাগ সমর্থন পাবে।’
কোহলিকে নিয়ে গুঞ্জন ছিল, কদিন পর শুরু হতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও ওয়ানডে সিরিজে তিনি নাকি খেলবেন না। কিন্তু সে গুঞ্জনও উড়িয়ে দিয়েছেন কোহলি, ‘বিসিসিআইয়ের কাছে আমি কখনোই বিশ্রাম চেয়ে আবেদন করিনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজের জন্য আমি নিজেকে প্রস্তুত রেখেছি, সব সময়ই রেখেছিলাম।’তাঁর বিশ্রাম চাওয়া নিয়ে গুঞ্জন নিয়ে আরেকবার প্রশ্ন হলে কোহলির উত্তর, ‘মিথ্যাগুলো যাঁরা লিখছেন, তাঁদের এই প্রশ্ন করা উচিত। বিসিসিআইয়ের সঙ্গে আমার এ রকম কোনো যোগাযোগই হয়নি, যেখানে আমি বিশ্রাম চেয়েছি।’