...
রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

ব্যভিচারের অভিযোগ, মামলা

যা যা মিস করেছেন

আলোচিত ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী তামিমা সুলতানার বিরুদ্ধে মামলা  হয়েছে। তামিমার স্বামী দাবি করে মো. রাকিব হাসান ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে গতকাল এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি শুনে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ৩০শে মার্চের মধ্যে তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। মামলাটিতে ব্যভিচারের অভিযোগ এনে দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় মামলা করা হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা। এক সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছেন, ইসলামী শরিয়ত মতেই তারা বিয়ে করেছেন।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড ফর চিলড্রেন এর নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল বলেন, যেসব ধারায় মামলাটি করা হয়েছে, অপরাধ প্রমাণিত হলে ৪৯৪ ধারায় তামিমা সুলতানাকে সর্বোচ্চ সাত বছর এবং ৪৯৭ ধারায় নাসিরকে পাঁচ (৫) বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ ছাড়া, ৫০০ ধারায় দুই (২) বছরের করাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে পারে।
বাদীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট ইশরাত হাসান। তিনি বলেন, মামলায় এক নম্বর আসামি হিসেবে তামিমা সুলতানা এবং দুই নম্বর আসামি হিসেবে ক্রিকেটার মো. নাসির হোসেনের নাম রয়েছে। এ ছাড়া, মামলায় চারজনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এরা হলেন বাদী নিজে, মোজারুল ইসলাম, রূপা আক্তার, লিটন হাওলাদার। ৪৯৪ ধারায় অভিযোগটি আনা হয়েছে তামিমার বিরুদ্ধে। ৪৯৭ ও ৪৯৮ ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে নাসিরের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ৫০০ ধারায় উভয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি মামলার বাদী  মো. রাকিব হাসানের সঙ্গে ১নং আসামি তামিমা সুলতানার ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ৩ লাখ এক টাকা দেনমোহরে বিয়ে এবং রেজিস্ট্রি হয়। বিয়ের পর হতে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করতে থাকেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে বাদীর ঔরসে তামিমার গর্ভে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। যার নাম রাখা হয় রাশফিয়া হাসান তোবা।  তার বর্তমান বয়স ৮ বছর। আসামি তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু। তিনি বর্তমানে সৌদি এয়ারলাইন্সে কর্মরত রয়েছেন। চাকরির সুবাদে তিনি ২০২০ সালের ১০ই মার্চ সৌদি আরব গিয়েছিলেন। করোনা মহামারির কারণে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হলে দেশে ফিরতে না পারায় সেখানেই অবস্থান করেন। এ সময় ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাকিবের সঙ্গে তার যোগাযোগ হতো।
মামলায় আরো বলা হয়, চলতি বছরের ১৪ই ফেব্রুয়ারি এক নম্বর আসামি তামিমার সঙ্গে ২নং আসামি নাসির হোসাইনের কথিত বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা বাদীর নজরে আসে। বাদী এই ধরনের ছবি দেখে হতবাক হয়ে যান। পরবর্তীতে পত্রিকায় এই বিষয়ে সংবাদ দেখে তিনি ঘটনার বিষয় নিশ্চিত হন। এ ছাড়া তাদের গায়ে হলুদ ও বিয়ে পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান যথাক্রমে ১৭ ও ২০শে ফেব্রুয়ারি সম্পন্ন হয়। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে। তামিমা বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় নাসিরের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। আসামি নাসির বাদীকে ফোন করে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং তার নিকট তামিমা আছেন।
মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় তামিমা নাসিরকে বিয়ে করেছেন, যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ। দুই নম্বর আসামি নাসির এক নম্বর আসামি তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন এবং এক নম্বর আসামির সঙ্গে অবৈধ বিয়ের সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, যা নিকৃষ্ট ব্যভিচার। আসামিদের এরূপ অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে বাদী ও তার ৮ (আট) বছর বয়সী শিশুকন্যা মারাত্মকভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছেন। আসামিদের এহেন কার্যকলাপে বাদীর চরমভাবে মানহানি হয়েছে। যার কারণে বাদী ও তার সন্তানের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে পারে: বিবাহের সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় বিবাহ করায় ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৯৪/৪৯৭/৪৯৮ ও ৫০০ ধারায় মামলা করা হয়েছে। যাতে অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের সুযোগ রয়েছে। দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারায় স্বামী বা স্ত্রীর জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহকরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি যদি এক স্বামী বা এক স্ত্রী জীবিত থাকা সত্ত্বেও এমন কোনো পরিস্থিতিতে বিবাহ করে, যে পরিস্থিতিতে স্বামী বা স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় সংঘটিত বলে অনুরূপ বিষয়টি অবৈধ হয়েছে, তবে উক্ত ব্যক্তি সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে। ৪৯৭ ধারায় ব্যভিচার সম্পর্কে বলা হয়েছে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি অপর কোনো ব্যক্তির স্ত্রী অথবা যাকে সে অন্য কোনো ব্যক্তির স্ত্রী বলে জানে বা তার অনুরূপ বিশ্বাস করার কারণ আছে এমন কোনো ব্যক্তির সঙ্গে উক্ত অন্য ব্যক্তির সম্মতি ও সমর্থন ছাড়া এরূপ যৌনসঙ্গম করে যা নারী ধর্ষণের শামিল নয়, তবে সে ব্যক্তি ব্যভিচারের অপরাধের জন্য দোষী হবে এবং তাকে সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে স্ত্রী ব্যক্তিটি দুষ্কর্মের সহায়তাকারী হিসেবে দণ্ডিত হবে না। ৪৯৮ ধারায় কোনো বিবাহিতা নারীকে অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে প্রলুব্ধকরণ বা অপহরণ বা আটককরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি যে নারী অপর পুরুষের সঙ্গে বিবাহিতা এবং তা সে জানে বা তার অনুরূপ বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে, এইরূপ নারীকে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে অবৈধ যৌনসঙ্গম করার উদ্দেশ্যে বিবাহিত পুরুষের নিকট থেকে বা সে পুরুষের স্বপক্ষে অপর যে ব্যক্তি সে নারীর তত্ত্বাবধায়ক সে ব্যক্তির নিকট থেকে অপহরণ বা প্রলুব্ধ করে নিয়ে যায় বা অনুরূপ কোনো নারীকে উপযুক্ত উদ্দেশ্যে গোপন বা আটক করে, তবে সে ব্যক্তি দুই বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবে। ৫০০ ধারায়  মানহানির শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি অন্য কোনো ব্যক্তির মানহানি করে, তবে উক্ত ব্যক্তি দুই বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।
গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্তরাঁয় ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

সূত্র : মানবজমিন

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.