সোমবার, মে ২০, ২০২৪

জিয়ার রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত

যা যা মিস করেছেন

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘বীরউত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধে অবদানের এ খেতাব প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার সকল রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধাও থাকবে না।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর স্কাউট ভবনে কাউন্সিলের দিনব্যাপী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর চার খুনির বীরবিক্রম ও বীরপ্রতীক খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন বিধি অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে জামুকা। এর পর মন্ত্রণালয় গেজেট আকারে প্রকাশ করবে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বরাবরই অভিযোগ করা হয়। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হওয়া আত্মস্বীকৃত চার খুনির খেতাব বাতিলের বিষয়টি জামুকার গতকালের সভায় উত্থাপন করা হয়। সভায় জামুকার সদস্য ও সাংসদ শাজাহান খান প্রশ্ন তোলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের খেতাব বাতিল করা হলে কেন জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করা হবে না। তিনি তাঁর এই বক্তব্যের সপক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরেন। পরে জামুকার সভার সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীসহ অন্য সদস্যরা শাজাহান খানের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

সভাসূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খেতাব বাতিলের বিষয়টি সভার আলোচ্যসূচিতে না থাকলেও ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধার সনদ যাচাই-বাছাই ও বাতিল-সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার সময় বিষয়টি উত্থাপিত হয়। তখন এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর জিয়াউর রহমানের খেতাব ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় জামুকা। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর খুনি ক্যাপ্টেন নূর চৌধুরী ও মেজর শরিফুল হক ডালিমের বীরবিক্রম খেতাব এবং রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন খানের বীরপ্রতীক খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাে র ৪৫ বছর পর তাদের মুক্তিযুদ্ধের খেতাব বাতিল হচ্ছে। চার খুনি বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবগঠিত কমিটি ও জামুকার সদস্য শাজাহান খান সমকালকে বলেন, ‘সভায় বঙ্গবন্ধুর চার খুনি ও জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাবসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাতিলের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সেগুলো আলোচনার ভিত্তিতে রেজুলেশন না হওয়া পর্যন্ত বলা সমীচীন নয়।’
কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিগগিরই কাজ শুরু করব। তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে কমিটির সুপারিশ জামুকায় দাখিল করা হবে।’
জামুকার এ সভায় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শাজাহান খান, উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ, মো. মোতাহার হোসেন, মো. শহীদুজ্জামান সরকার এবং যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রশিদুল আলম ও মেজর (অব.) ওয়াকার হাসান বীরপ্রতীক। পদাধিকার বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামুকার প্রধান উপদেষ্টা।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খেতাব বাতিল এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকাে র মদদদাতাদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের দাবি গত কয়েক বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বিভিন্ন সময় এ নিয়ে কমিশন গঠনের কথা বলেছিলেন।
কমিশন গঠন না হলেও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মদদদাতাদের চিহ্নিত করতে জামুকা থেকে কমিটি গঠনের বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তিনি সমকালকে বলেন, ‘দীর্ঘকাল থেকেই আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাে র নেপথ্য নায়কদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের জন্য বলে আসছি। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়েও কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছিল; কিন্তু গঠন করা হয়নি। এখন যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এটি অত্যন্ত ইতিবাচক।’

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security