...
শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪

ঝিনাইদহে বাণিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে তেজপাতা চাষ

যা যা মিস করেছেন

ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলা জুড়ে বাণিজ্যিক ভাবে তেজপাতার আবাদ করা হচ্ছে। এর মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলাতে আবাদ হচ্ছে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে। চাষী আছে অন্তত ৬০ জন।

তেজপাতার একটি গাছ থেকে বছরে দুবার পাতা তোলা যায়। রোগ বালাই বা ফসলের তেমন ক্ষতি না থাকায় প্রতি বিঘা থেকে বছরে প্রায় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা আয় হচ্ছে। কালীগঞ্জের সুন্দর দুর্গাপুর ইউনিয়নের আবুল কালাম আজাদ চার বছর ধরে তেজপাতা চাষ করছেন। তার নিজের ৩৫ শতাংশ জমিতে তেজপাতা চাষের জন্য বেছে নিয়েছেন। খুলনা থেকে তেজপাতার চারা এনেছিলেন। তার জমিতে ১৩০টি তেজপাতার গাছ রয়েছে। বছরে দুই বার সার দিয়ে থাকেন। বছরে প্রতি গাছ থেকে বছরে দুবার তেজপাতা সংগ্রহ করছেন। চার বছর বয়সী গাছ থেকে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি পাতা সংগ্রহ করছেন। প্রতি কেজি তেজপাতা ৮০-৯০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।

তেজপাতা চাষী আবুল কালাম আজাদ জানান, তার বাগানে প্রথম বছর তিন মণ তেজপাতা উৎপাদন হয়। এর পরের বছর ৯ মণ পাতা সংগ্রহ করেন। সর্বশেষ গেল বছরে তেজপাতার বাগান থেকে ২৩ মণ পাতা সংগ্রহ করেছেন। আসছে মৌসুমে ২০ মণ পাতা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। আবুল কালাম আরো জানান, প্রতি কেজি তেজপাতা পাইকারি ৮০-৯০ টাকা দরে বিক্রি করে বাগান থেকে আয় করেছেন এক লাখ টাকার মতো। খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হয়েছে ৮০ হাজার টাকার মতো।

এলাকার অন্য চাষীদের ভাষ্য, তেজপাতা চাষে তেমন খরচ হয় না। চারা লাগানোর পর শুধু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাই প্রধান কাজ। রোগ বালাই নেই বললেই চলে। তবে বসন্তকালে পোকার আক্রমণের আশঙ্কা থাকে। সে সময় ওষুধ প্রয়োগ করলে সে আশঙ্কা থাকে না। বিঘা প্রতি তেজপাতার উৎপাদন খরচ মাত্র ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার মতো। আরো কয়েকজন চাষী জানান, তেজাপাতার সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে হলুদ, কলাগাছও লাগানো যায়। এতে এক সঙ্গে দুই ধরনের ফসল পাওয়া যায়।

তেজপাতা চাষী জাহিদ হাসান বলেন, তেজপাতা চাষে আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। তাদের পরামর্শেই আমরা তেজপাতা চাষাবাদ করছি। এলাকায় নতুন ভাবে এই মসলা জাতীয় ফসল চাষে আগ্রহ বাড়ছে। জাহিদ হাসান আরো বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে তেজপাতা চাষে খরচ খুব সামান্য। আর ফসলহানির ঝুঁকিও নেই তেমন। সে কারণে দিন দিন এলাকার অন্য চাষীরাও তেজপাতা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। জাহিদ হাসানের আশা অন্য ফসলের চেয়ে তেজপাতায় অনেক বেশি লাভ হবে।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, তেজপাতা একটি নতুন অর্থকারী ফসল। সঠিক নিয়মে তেজপাতা চাষ করলে গতানুগতিক অন্য ফসলের চেয়ে তেজপাতায় বেশি লাভবান হবেন কৃষকরা। তাছাড়া তেজপাতা শুধু মসলা হিসেবেই ব্যবহার হয় না, এর রয়েছে ঔষধি গুণাগুণ। তেজপাতা গাছের বাকল থেকে তেল, ওষুধ, কীটনাশক ও সুগন্ধির উপকরণ পাওয়া যায়। সাথী ফসল হিসেবে তেজপাতার বাগানে নানাবিধ ফসলও চাষ করা যায়। সাধারণত বর্ষার মৌসুমে তেজপাতা গাছ রোপণ করা হয়। দুই বছরের মধ্যেই পাতা সংগ্রহ করা যায়।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া তেজপাতা চাষের উপযোগী। সে কারণে তেজপাতা চাষে এখানকার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলার প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে তেজপাতা চাষ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ করে ১নং সুন্দপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নের কাদিরকোল, সিনদহ এলাকায় সবচেয়ে বেশি প্রায় ২০ বিঘা জমিতে তেজপাতার আবাদ হচ্ছে। এখানকার অর্ধশত চাষী তেজপাতা চাষে জড়িত।

তবে পারিবারিক চাহিদা মেটাতে এখানকার প্রতিটি বাড়িতে দুই একটি করে তেজপাতা গাছ লাগানো হয়েছে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.