...
বৃহস্পতিবার, মে ১৬, ২০২৪

ফেসবুকে সন্তানের ভিডিও দিয়ে ভাইরাল

যা যা মিস করেছেন

সেদিন রিমিকা ফেসবুকে নানা মানুষের; এমনকি নিজের দেওয়া স্ট্যাটাস নিয়ে ভাবছিলেন। বিশেষ করে তাঁর ছোট মেয়ের ছবি যে ইদানীং প্রতিদিন পোস্ট করছেন নিজের ভালো লাগা বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য, সেই নির্দোষ কাজটি কি কখনো কোনো বিপদ ডেকে আনতে পারে? অথবা সেটা কতটুকু ঠিক?

ফেসবুকে কোনো স্ট্যাটাস দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাইক, কমেন্ট বা শেয়ার মোটামুটি সবাইকেই অনুপ্রাণিত করে। অন্যের মনোযোগ বা গুরুত্ব আমাদের সব সময় একধরনের উৎসাহ জোগায়।

মনোবিজ্ঞানের একটি সূত্র হলো, যে কাজে অন্যের উৎসাহ বা মনোযোগ বাড়ে, সেটা আমরা বেশি বেশি করতে উৎসাহিত হই।

অনেক মা-বাবাই বাচ্চাদের ছবি, ভিডিও, স্টোরি নিয়মিত পোস্ট করেন। নিজের অন্যতম ভালো লাগা ও ভালোবাসার জায়গা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করা এবং আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যুক্ত থাকা অন্যতম কারণ। অনেক সময় অন্যদের কাছ থেকে ভালো উপদেশ, উৎসাহমূলক কথা শোনা, ভালো কাজে অনুপ্রাণিত হওয়া ছাড়াও এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদের ক্ষেত্রবিশেষে নিজের একাকিত্ব কম বোধ করতে সাহায্য করে বা অন্যের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অনুভূতি জাগায়। অনেক সময় বাবা-মায়েরা আনন্দ থেকেই শিশুর প্রতিদিনের কর্মকাণ্ড (এমনকি গোসলের ছবি), শিশুর নানা পারফরম্যান্সের ভিডিও, লাইভ পাবলিশ করেন। এ ছাড়া দেখা গেছে শিশুদের যেকোনো পোস্ট ফেসবুকে সহজেই জনপ্রিয়তা পায়।

মা–বাবা তাঁদের যে অনুভূতি বা আনন্দ নিয়ে নির্দোষভাবে কোনো ছবি পোস্ট করলেও যাঁরা দেখছেন, তাঁদের মধ্যে নানা নেতিবাচক অনুভূতি কাজ করতে পারে।

শিশুদের ছবি পোস্ট করার বিষয়ে কেন আমাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন?

শিশুসংক্রান্ত যেকোনো পোস্ট শিশুর একান্ত নিজের হওয়া সত্ত্বেও এ ক্ষেত্রে মূলত শিশুর হাতে কিছু থাকে না। শিশু আসলেই চাইছে কি না, বা পছন্দ করবে কি না, সেটা ঠিক আমরা ভাবি না। নানাভাবেই জন্মের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার অংশগ্রহণ অনেকখানিই নির্ধারিত হয় মা–বাবার একান্ত ইচ্ছায়।

ফেসবুক

ফেসবুক
শিশুর প্রাইভেসি
অনেক সময় শিশুর ব্যক্তিগত ছবি (যেমন: ন্যুড ছবি, গোসলের ছবি ইত্যাদি) মা–বাবা পোস্ট করলে সন্তানের ঠিক এখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কিন্তু এসব ছবিতে শিশুর প্রাইভেসি নষ্ট হওয়া ছাড়াও অনেক সময় শিশুদের এসব ব্যক্তিগত ছবি পেডোফিলিক ব্যক্তিদের (যাঁরা শিশুদের প্রতি যৌনাকর্ষণ বোধ করেন) নেতিবাচক নজরে আসতে পারে।

শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্ভরশীলতা
ছোটবেলা থেকেই শিশুদের এসব সোশ্যাল মিডিয়া বা ফেসবুকে নানাভাবে জনপ্রিয়তা বা তথাকথিত তারকার খেতাব পাওয়া ইত্যাদি কোনো না কোনোভাবে শিশুর মনোজগৎকেও প্রভাবিত করে। ভার্চ্যুয়াল জগতে অনেকের মনোযোগ শিশুকে নিজের সম্পর্কে একধরনের ভ্রান্ত ধারণা এবং ক্ষেত্রবিশেষে তাকে বাস্তব জগতের বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে। অন্যের চোখে গ্রহণযোগ্য হওয়ার মানসিকতা এ ক্ষেত্রে অনেক সময় শিশুর সম্ভাবনার স্বতঃস্ফূর্ত বা নিজ গতিতে বিকাশ অনেক সময় বাধাগ্রস্ত করে। ভার্চ্যুয়াল জগতে তার যে গ্রহণযোগ্যতা, সেটাই অবচেতনভাবে সে চারপাশ থেকে প্রত্যাশা করার মানসিকতা তৈরি হয়।

নিরাপত্তা ব্যাহত

শিশু কখন কোথায় যাচ্ছে, তার অবস্থান, স্কুল, নানা জায়গায় চেক-ইনের পোস্ট ক্ষেত্রবিশেষে তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

কিছুসাবধানতা

*   ছোট শিশুর একান্ত ব্যক্তিগত ছবি, আদর করার দৃশ্য ইত্যাদি পাবলিক না করে ক্লোজড গ্রুপে দেওয়া ভালো।

* শিশু যত ছোটই হোক, শরীরের ব্যক্তিগত অংশ প্রকাশিত থাকে এমন ছবি প্রকাশ না করা ভালো।

*  অন্যের শিশুর ছবি পোস্ট করার আগে তাদের মা–বাবার অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন।

*  শিশু একটু বড় হলে তার ছবি, ভিডিও বা কোনো স্টোরি প্রকাশ করার আগে শিশুর অনুমতি নেওয়া উচিত। মনে রাখা উচিত, শিশুর শরীর বা তার কোনো কর্মকাণ্ড একান্তই তার নিজের। এটার কতটুকু সে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবে, সেটার সিদ্ধান্ত তার নিজের।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.