বুধবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৪

হীরকভস্মে সারে রক্তের ক্যানসার! চাঞ্চল্যকর দাবি গবেষকদের

যা যা মিস করেছেন

হীরকভস্ম। সাতশো ডিগ্রি সেলসিয়াসে হিরা পুড়িয়ে ভস্ম। তাই দিয়েই কর্কটরোগের (ক্যানসার) নিধন। বহু যুগ ধরে চলে আসা এমন ‘রত্নচিকিৎসা’ অবশেষে স্বীকৃতি পেল। সোমবারই এই সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করার জন্য গ্রহণ করেছে ‘ফ্রন্টিয়ারস ইন ফার্মাকোলজি’ পত্রিকা।

এতে উচ্ছ্বসিত হয়েছে আয়ুর্বেদমহল। তাদের পর্যবেক্ষণ, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা ক্যানসার চিকিৎসায় বহু বছর ধরে হীরকভস্ম ব্যবহার করছেন। বহু রোগীর নিরাময় করেছেন। কিন্তু গবেষণাগারে বিজ্ঞানের নিয়ম মেনে সেই সত্যিটাকে প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। এবার সেই পথেই এগোল একদল চিকিৎসক এবং প্রাণিবিজ্ঞানী সম্মিলিত গবেষণা।

গবেষণার নেতৃত্বে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুমিত হীরা। সঙ্গী আরও কয়েকজন। শ্যামবাজারের জে বি রায় আয়ুর্বেদ কলেজের ডা. পুলককান্তি কর ও ডা. প্রশান্তকুমার সরকার। সিধু কানু বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবাঞ্জন সরকার ও শঙ্কর ভট্টাচার্য। বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির পার্থ পি মান্না ও রঞ্জিত সিং। সুমিতের দাবি, ‘মাইস মডেলে’-এ পরীক্ষা করে দারুণ ফল মিলেছে। ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে লিম্ফোমা ক্যানসার বা ব্লাড ক্যানসার সম্পূর্ণভাবে সেরে গিয়েছে। বাকি ক্ষেত্রে আয়ুরেখা বেড়েছে।

জানা গিয়েছে, যে ইঁদুরগুলির উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলেছে সেগুলির গড় আয়ু দুই বছর। রক্তের ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার পর সেগুলির সাকুল্যে ২০ দিন বাঁচার কথা। কিন্তু হীরকভস্মের দৌলতে সম্পূর্ণ ক্যানসারমুক্ত না হয়েও সেগুলি ৮০ দিন বেঁচে ছিল। আরও একটি বিষয় গবেষণায় উঠে এসেছে। তা হল, ক্যানসারমুক্ত হওয়া ইঁদুরগুলির শরীরে পুনরায় লিম্ফোমা ক্যানসারের জীবাণু প্রবেশ করানো হলেও তা রুখে দিয়েছে ক্যানসারজয়ী ইঁদুর-শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এই তথ্যই উৎসাহিত করেছে বিজ্ঞানীদের।

সুমিতের দাবি, ন্যানো পার্টিকেলে পরিণত হওয়া হীরকভস্ম ইঁদুরের শরীরে একদিন অন্তর প্রয়োগ করা হয়েছে। দশ দিনের দু’টি স্পেলে ওষুধ প্রয়োগের পর ৬০ শতাংশ ইঁদুরের শরীর থেকে ক্যানসার সম্পূর্ণ নির্মূল হয়েছে। বাকি ক্ষেত্রে আয়ুরেখা বেড়েছে।

কীভাবে কাজ করল এই ওষুধ? গবেষণাপত্র থেকে জানা গিয়েছে, হীরকভস্ম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। টিএনএফ আলফা সাইটোকাইন ও মেমোরি টি সেল তৈরি করছে। যা ক্যানসার আক্রান্ত কোষকে নিকেষ করছে। ম্যাক্রোফাজ বা ডেনড্রাইট সেলকে এমনভাবে উদ্দীপ্ত করছে যে ক্যানসার শরীরের অন্যত্র আর ছড়াতে পারছে না। অর্থাৎ মেটাস্টেসিসও রুখে দিচ্ছে হীরকভস্ম। টিউমারের আকার দ্রুত কমিয়ে ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে একেবারে গায়েব করে দিচ্ছে।

গবেষকদের দাবি, ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট’-এর সদস্য তথা নিউ ইয়র্কের কর্নেল মেডিক্যাল কলেজের আয়ুর্বেদ ক্যানসার কেয়ার ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ার ডা. ভাস্বতী ভট্টাচার্য এই ধরনের গবেষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন, তার পর্যবেক্ষণ, আয়ুর্বেদের ‘রসরত্ন সমুচ্চয়’ গ্রন্থে ক্যানসার আক্রান্ত টিউমার বা অর্বুদ চিকিৎসার উল্লেখ রয়েছে। এই রত্নচিকিৎসার কার্যকারিতা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। সরাসরি ‘হিউম্যান মডেল’-এও গবেষণা চালানো যেত। সূত্র: দ্য কনভারসেশন।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security