লোকমান হাফিজ,সিলেট প্রতিনিধি : মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান দিদারুল আলম। টানাপোড়নের সংসার তাদের। নুন আনতে পান্তা ফুরায়। ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর চাকরি খুঁজতে শুরু করেন। একটা চাকরি তার জীবনে জরুরি হয়ে পড়ে।
চাকরি কি আর এত সহজে পাওয়া যায়! চাকরির পেছনে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে যখন নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছিল ঠিক তখনই নিজেকে অন্যভাবে সাজানোর পরিকল্পনা করেন। বাড়িতে থাকা পরিত্যক্ত জমিতে শুরু করেন ছোট ছোট গাছ লাগানো। যেগুলো তাড়াতাড়ি ফল দেয়। ফল গুলো বিক্রি করে পরিবারের পাশে দাঁড়ান। মোটামুটি একটা আয় আসা শুরু হয়। তারপর পরীক্ষামূলক কাজে নেমে পড়েন। ধীরে ধীরে কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়তে বাড়তে হয়ে উঠেন কৃষি উদ্যোক্তা।
বর্তমানে নার্সারি এবং সবজি থেকে আয় করছেন বছরে দুই লক্ষ টাকা। এবং থেমে থাকেনি তার পড়ালেখাও। সিলেটের সুনামধন্য বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজের বিএসএস ফাইনাল ইয়ারে পড়ছেন তিনি।
দিদারুল আলম সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের গুলনী গ্রামে। দিদারুল আলম জানান, ২০ শতক জায়গায় ছোট্ট পরিসরে নার্সারি করে চারা উৎপাদন শুরু করি। মোটামুটি লাভ আসা শুরু হলে জায়গার পরিমান বাড়িয়ে বাড়িয়ে বর্তমানে ২ একর জায়গার মধ্যে সবজিও উৎপাদন করে থাকি।
আমার সবজি বাগানে ঝিঙ্গা, আলু, মুলা, লাউ, করলা, পেঁপে, মিষ্টিকুমড়া, লালশাক, ডাটাশাক, রাইশাক, পাটশাক, ধনিয়া ইত্যাদি। এগুলো বাণিজ্যিক চাষের পাশাপাশি নিজের খাবারের জন্যও উৎপাদন করে থাকি। সবজি ও তৈল জাতীয় ফসল ছাড়াও মাল্টা, জাড়া লেবু, কাগজি লেবু আছে। দেশি ফসলগুলো বেশি বিক্রি হয় এবং বেশি লাভবান হওয়া যায়। বিদেশি কিছু ফসল চাষ করি ।এগুলো বিক্রি করে খুব একটা লাভবান হওয়া যায়না।
ভবিষ্যতের প্ল্যান পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি জায়গার পরিধি আরও বাড়াতে চাই আমার বাড়ি একটি খামারে রূপান্তরিত করতে চাই। এবং আমার খামারে যেন কিছু লোক কাজ করে বেকারত্ব দূর করতে পারে। উপজেলা কৃষি অফিসারের সহযোগিতা পান এবং তার প্রতি তিনি খুবই আন্তরিক।
কিন্তু উপজেলা কৃষি অফিস তাকে যে পরিমাণ সহযোগিতা করে এগুলো চাহিদার তুলনায় খুবই কম। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যদি তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় তাহলে অনেক ভালো কিছু করতে পারবেন বলে মনে করেন। আজ পর্যন্ত নেই তার দীর্ঘমেয়াদি কোন প্রশিক্ষণ। নিরাপদ সবজি উৎপাদনের উপর স্বল্প মেয়াদি একটা ট্রেনিংই তাকে সহায়তা করছে।