আর এক-দুই মৌসুম পরই হয়তো নস্টালজিয়ায় ভুগতে শুরু করবেন চলতি শতকের শুরু থেকে ফুটবল অনুসরণ করা সমর্থকেরা। কেননা এ শতকের সেরা দুই ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং লিওনেল মেসি যে পৌঁছে গেছেন শেষের খুব কাছে। শুধু বয়সের ভারে নয়, হয়তো দলীয় এবং ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও।
হঠাৎ করে এমনটা বলা কেন? কারণ গত প্রায় দেড় দশকে (১৪ বছর) যা হয়নি, তা হয়ে গেল ২০১৯-২০ মৌসুমে। সেই ২০০৫-০৬ মৌসুমের পর প্রথমবার উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে দেখা যাবে না মেসি ও রোনালদোকে। দুজনই ছিটকে গেছেন সেরা চারের লড়াইয়ের আগে।
শুক্রবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে মেসির বার্সেলোনাকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ৮ গোল দিয়েছে জার্মান ক্লাবটি। বিপরীতে মাত্র ২ গোল পেয়ে শেষ আট থেকেই ছিটকে গেছে বার্সেলোনা ও মেসি।
রোনালদোর বিদায়টা হয়েছিল আরও এক রাউন্ড আগে। ফ্রেঞ্চ ক্লাব অলিম্পিক লিওনের বিপক্ষে শেষ ষোলোর দুই লেগ মিলে ২-২ গোলে ড্র করলেও, অ্যাওয়ে গোলের কারণে বাদ পড়ে গেছে রোনালদোর জুভেন্টাস। দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে জোড়া গোল করেও দলকে বাঁচাতে পারেননি রোনালদো।
যে কারণে চ্যাম্পিয়নস লিগের ১৪ মৌসুম পর হবে মেসি-রোনালদোবিহীন সেমিফাইনাল। ২০০৬ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগের আসরে ঠিকই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বার্সেলোনা। স্কোয়াডেও ছিলেন মেসি। কিন্তু খেলেননি সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনাল ম্যাচ। অন্যদিকে সে আসরে গ্রুপপর্ব থেকেই ছিটকে গিয়েছিল রোনালদোর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
এরপর থেকে চলতে থাকে এ দুই তারকার রাজত্ব। মাঝে ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত টানা পাঁচ মৌসুমে সরাসরি চ্যাম্পিয়নই হয়েছিল মেসি-রোনালদোর দল। এর মধ্যে ২০১৫ সালে শিরোপা জিতেছিল বার্সেলোনা। বাকি চার বছর রোনালদোর নৈপুণ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় রিয়াল মাদ্রিদ। ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে জিতেছিল হ্যাটট্রিক শিরোপা।
মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে বদলে গেল সকল দৃশ্যপট। রোনালদোর দল পারেনি দ্বিতীয় রাউন্ডের বাধা টপকাতে আর মেসির দল কোয়ার্টারে, বিধ্বস্ত হলো বায়ার্ন মিউনিখের আক্রমণাত্মক ফুটবলের কাছে।এ অবস্থার উন্নতি না ঘটলে দুই মৌসুমের মধ্যেই ফুটবলপ্রেমীদের মনে বাজতে শুরু করবে মান্না দে’র কালজয়ী সেই গান, ‘কোথায় হারিয়ে গেল সোনালি বিকেলগুলো সেই, আজ আর নেই।’