...
রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

আত্মহত্যার কারণ শাবনূরের সঙ্গে ‘অতি-অন্তরঙ্গতা’-সামিরা

যা যা মিস করেছেন

বাংলা সিনেমার হার্টথ্রব হিরো সালমান শাহর সঙ্গে সামিরা হকের বিয়ে হয় ১৯৯২ সালের ২০ ডিসেম্বর।

প্রেমের সম্পর্কের শুরু তারও দুই বছর আগে। সামিরা বলেন, সালমান তাঁকে সঙ্গে নিয়েই শুটিংয়ে যেতেন। প্রায় প্রতিটি সিনেমায় সালমানের ‘ড্রেস ডিজাইনার’ ছিলেন তিনি। ’৯৬ সালে বাদল খন্দকারের একটি সিনেমার শুটিংয়ে সালমান ও শাবনূর কক্সবাজারে যান। সেখানেই সম্পর্কে জড়ান তাঁরা। ওই বছরের আগস্টে শাবনূরকে নিয়ে সিঙ্গাপুরে যান সালমান। সেখান থেকে ফিরে সালমান নিজেই সামিরাকে বলেন, তিনি একটা অন্যায় করে ফেলেছেন। শাবনূরের সঙ্গে এমন কিছু পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হতে পারে। সামিরা তখনই বিবাহবিচ্ছেদ চেয়েছিলেন। সালমান শোনেননি। তখন কিছু পত্রপত্রিকায় সালমান শাবনূরকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন বলে খবর বেরোয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায়, সংবাদ সম্মেলন করে সালমানকে ঘোষণা দিতে হয় সামিরা তাঁর স্ত্রী।

একপর্যায়ে সামিরা চট্টগ্রামে চলে যান। চট্টগ্রামে থেকেও তিনি খবর পাচ্ছিলেন সালমানকে অসদাচরণের জন্য প্রযোজক-পরিচালক সমিতি থেকে তিরস্কার করা হয়েছে। তিনি কাজে মন বসাতে পারছেন না। বেশ কিছু অঘটনও ঘটিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৩ সেপ্টেম্বর সালমানের কাছে ফিরে আসেন সামিরা। এসে কী দেখলেন? এমন প্রশ্নে সামিরা বলেন, ‘ইমন (সালমান) কতটা আবেগপ্রবণ ছিল, সেটা কেউ বুঝবে না। ভাববে সিনেমাটিক। কিন্তু আমি ফিরে দেখলাম, রাগ করে চট্টগ্রাম যাওয়ার আগে যেভাবে যা রেখে গেছি, সেভাবেই আছে। ইমন মাটিতে ঘুমোচ্ছে। সঙ্গে আমার একটা টপস।’ সামিরা সব ভুলে নতুন করে শুরু করতে চেয়েছিলেন। পরদিন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানেও দুজনে একসঙ্গে যান। ওই বছর সালমান সেরা চিত্রনায়ক ও শাবনূর সেরা নায়িকার পুরস্কার পেয়েছিলেন। তবে শাবনূর ওই অনুষ্ঠানে আসেননি। এর দুদিন পর আত্মহত্যা করেন সালমান।

ঢাকাই সিনেমার বাঁক বদল করে দেওয়া নায়কের স্ত্রী ছিলেন সামিরা। এই নায়কের আত্মহত্যার ঘটনায় ভক্তদের কেউ কেউ আত্মহত্যা করেছেন। নানা রকম বিরূপ সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে সামিরাকে। এই জীবনটায় খাপ খাওয়ালেন কী করে? সামিরা বলেন, কারও প্রতি তাঁর কোনো রাগ বা ক্ষোভ নেই। শুধু শাবনূর তাঁর সঙ্গে যা করেছেন, সেটা তিনি ভুলতে পারেন না। একটা সময় তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ছিল। তিনি সাজগোজ করতে শিখিয়েছিলেন শাবনূরকে। তাঁর টি-শার্ট পরে একটি ছবিতে অভিনয়ও করেছেন শাবনূর। সেই মেয়েটি কী করে সালমানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালেন, এ নিয়ে দুঃখ হয় সামিরার।

সালমানের মৃত্যুর পর তাঁর দিনগুলো কীভাবে গেছে, সে খবর কেউ রাখেননি। বরাবর সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর কথায় সবাই তাঁকে দোষী করে গেছেন। সামিরার ভাষায়, ‘ইমন চলে যাওয়ার এক সপ্তাহ পেরোনোর আগেই আমাকে প্রতিদিন ডিবিতে হাজিরা দিতে হতো। এমনটা চলেছে প্রায় তিন মাস। আমার আব্বা উল্টো দিকে মুখ ফিরিয়ে বসে থাকতেন, যেন চোখাচোখি না হয়। আর আমি পুলিশ অফিসারের হাজারো প্রশ্নের জবাব দিতে থাকতাম।’

সামিরার মা চীনা বংশোদ্ভূত। তাঁদের বেশ কিছু আত্মীয়স্বজন কলকাতায় আছেন। একটা সময় সামিরাকে তাঁর মা কলকাতায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

ডিবির প্রতিবেদনে নারাজি দেওয়ায় মামলা সিআইডিতে যায়। সিআইডির তদন্ত শুরু হলে তিনি কলকাতা থেকে ফিরে আসেন। আবারও বসেন পুলিশের মুখোমুখি। সিআইডি সিদ্ধান্ত দেয়, সালমান খুন হননি, আত্মহত্যা করেছেন। এরপর শুরু হয় বিচার বিভাগীয় তদন্ত। পিবিআই গত তিন বছরে বেশ কয়েকবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। যখনই কারও সাক্ষ্য নিয়েছে, তখনই তাঁর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়েছে। প্রতি দফায় তাঁকে বসতে হয়েছে কমপক্ষে পাঁচ দিন।

সামিরা হক এখন তিন সন্তানের মা। ’৯৯ সালে দুই পরিবারের সম্মতিতে সামিরা বিয়ে করেন সালমান শাহর বন্ধু মোস্তাক ওয়ায়েজকে। সামিরা জানান, তাঁর বিয়ে করার কোনো প্রস্তুতি ছিল না। দেশের বাইরে চলে যেতে চেয়েছিলেন। ‘ও’ লেভেলের পর তাঁর পড়ালেখা হয়নি সালমানের অনাগ্রহে। তবে এখনো বিড়ম্বনা তাঁর পিছু ছাড়েনি। স্বামীর সঙ্গে কোথাও গেলে অনেকে ফিসফাস করেন।

সালমানের মৃত্যুর প্রায় দুই যুগ পর এসব কথা শুনে রীতিমতো বিরক্ত শাবনূর তিনি বলেন আমাকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে ।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.