বিমানে বসে ল্যাপটপ বা ট্যাবলেটের মতো ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে মার্কিন সরকার। আগামীকাল শনিবার থেকেই কার্যকর হবে এই তা। ওদিকে, এতে ব্যাপক বিড়ম্বনায় পড়বেন অসংখ্য যাত্রী। তবে দারুণ এক সমাধান এনেছে এমিরেটস এয়ারলাইন্স।
তাদের আমেরিকাগামী ফ্লাইটগুলোর যাত্রীরা বিমানে ওঠার আগেই ইচ্ছেমতো ল্যাপটপ ও ট্যাব ব্যবহার করতে পারবেন। চেকিংয়ের সময় প্রযুক্তিযন্ত্রগুলো লাগেজে রাখার ঝক্কিও পোহাতে হবে না তাদের। আসলে এমিরেটস কর্তৃপক্ষ চাইছে, যাত্রীরা ফ্লাইটে চেপে বসার আগেই তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ফেলুক। এতে মার্কিন সরকারের নিয়মও ভাঙা হবে না, আবার যাত্রীরাও অনেকটা পেরেশানিমুক্ত থাকবেন।
এমিরেটস এর প্রেসিডেন্ট টিম ক্লার্ক এক বিবৃতিতে বলেন, আসলে নতুন নিয়মের প্রয়োগ ঘটানোই আমাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু সেই সঙ্গে যাত্রীদের সেবা প্রদানের পথ যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকেও খেয়ার রাখা হয়েছে। আমাদের নতুন নিয়ম যাত্রীদের একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ল্যাপটপ ও ট্যাব ব্যবহারের সুযোগ করে দেবে। বিশেষ করে যারা ব্যবসায়ীক কাজে বিমানে চেপেছেন তারা একে উপকৃত হবেন বৈকি।
গত মঙ্গলবার ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং ইউএস ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নয়া এক নির্দেশনা জারি করে। সেখানে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার ১০টি বিমানবন্দর থেকে আমেরিকামুখী বিমানগুলোর যাত্রীরা স্মার্টফোনের চেয়ে বড় আকারের কোনো প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহার করতে পারবেন না।
এ নিয়মের কারণে এমিরেটস এর মতো ক্যারিয়ারগুলো যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে বেশ ঝামেলায় পড়ে যায়। ব্যবসার কাজে যারা ছোটাছুটি করেন তাদের মাধ্যমে আসা রেভিনিউয়ের বড় একটি অংশ খোয়ানোর সম্ভাবনা দেখা দেয়। তাদের এয়ারবাস এ৩৮০ সুপারজাম্বোর শত শত সিট খালি পড়ে থাকার আশঙ্কা জাগে।
আসলে বিমানগুলো যখন সন্ত্রাসীদের টার্গেট, তখন নিরাপত্তার জন্য এই নিয়মটি কার্যকর জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি অ্যানালিস্টদের মতে, এ ধরনের নিয়ম এলোমেলো পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।
তাই সৃষ্টিশীল সমাধানের পথে এগিয়েছে এমিরেটস। ধরা যাক, তাদের একটি ফ্লাইট ইন্ডিয়া থেকে উড়ে দুবাই হয়ে আমেরিকা যাবে। এর যাত্রীরা প্রথম দফা ফ্লাইটে ল্যাপটপ ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি নিয়ম ভঙ্গের অনুসন্ধান শুরুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যাত্রীদের সুযোগ করে দেবে এমিরেটস।
সাধারণ নিয়মটি হলো, যাত্রীদের কাছে এসব প্রযুক্তিপণ্য থাকলে তার কথা আমেরিকাগামী ফ্লাইটে ওঠার আগেই নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মীদের জানাতে হবে। তারপর যন্ত্রগুলো নিরাপদ বাক্সে ভরে এয়ারক্রাফটের কার্গো হোল্ডে সংরক্ষণ করা হবে।
মার্কিন মুলুকে পৌঁছানোর পর তা ফেরত দেওয়া হবে মালিককে। যাত্রীদের হাতে রাখা ব্যাগগুলোতেও ল্যাপটপ বা ট্যাবের খোঁজে তল্লাশি চালানো হবে। ফ্লাইটে যাত্রীরা এয়ারলাইন্সের ফ্রি ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
ক্লার্ক এক হিসাবে জানায়, বিমানের ৯০ শতাংশ যাত্রী যার যার স্মার্টফোনের মাধ্যমে ওয়েবে সার্ফিং করেন। আর ৬ শতাংশ ল্যাপটপ ব্যবহার করে থাকেন।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার