তুঙ্গে চড়েছে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার মাঠের বাইরে বিতর্ক। রীতিমতো কথার যুদ্ধে নেমে পড়েছে দেশটির দুটির ক্রিকেটাঙ্গন। আসন্ন চতুর্থ টেস্টের আগেই দল দুটির ক্রিকেটারদের মাঠের বাইরের বিতর্ক ছাপিয়ে ক্রিকেটের আঙ্গিনাও। গণমাধ্যমও যুক্ত হয়েছে শীর্ষস্থানীয় টেস্ট খেলুড়ে দেশ দুটির মাঠের বাইরের যুদ্ধে।
সম্প্রতি দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ অস্ট্রেলিয়ার এক রিপোর্টে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে তুলনা করা হয়েছে ক্রিকেটের ডোনাল্ড ট্রাম্প হিসেবে। বিশ্বখ্যাত গণমাধ্যমটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ট্রাম্পের মতোই সব কিছুর জন্য কোহলি মিডিয়াকে দায়ী করতে শুরু করেছেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত টেলিগ্রাফ অস্ট্রেলিয়ার ওই প্রতিবেদন চরম সমালোচনা শুরু হয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমেও। সব মিলিয়ে মাঠের বাইরের বিতর্কের তুঙ্গে থেকেই ২৫ মার্চ দল দু’টি শুরু করবে সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টেস্ট। ৩ ম্যাচ শেষে ১-১ এ সমতা বিরাজ করছে সিরিজে।
রাচি টেস্টের ড্রর পরই নতুন করে মাঠের বাইরে বিতর্ক শুরু হয় ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে। সূচনাও হয় যথারীতি ভারতীয় অধিনায়ক কোহলির কাছ থেকে। ম্যাচের শেষে অসি গণমাধ্যমকে আক্রমণ করেন। অসি ক্রিকেটারদের দ্বারা ভারতীয় ফিজিও প্যাট্রিক হারহার্টের সম্মানহানির অভিযোগও আনেন কোহলি।
তিনি বলেন, ‘ভারতীয় মিডিয়া সর্বদা ক্রিকেট বিষয়ে জানতে চায়, কিন্তু তোমরা প্রথমে বিতর্কের বিষয়ে শুনতে আগ্রহী। ঠিক আছে। মাঠে অনেক কিছুই ঘটে। চার থেকে পাঁচজন (অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার) প্যাট্রিককে নিয়ে কথা বলতে শুরু করল। কিন্তু কেন, তা আমি জানি না। তিনি আমাদের চিকিৎসক। সবাইকে সাহায্য করেন। কিন্তু বুঝতে পারিনি, কেন তাকে নিয়ে আলাপ করা হয়েছে।’
কোহলির অভিযোগের উত্তর দিতে মোটেও দেরি হয়নি ডেভিড ওয়ার্নার ও অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের। ওয়ার্নার বলেন, ‘১৯ বছর নিউ সাউথ ওয়েলসে কাটান প্যাট্রিক। তাকে অবজ্ঞা করার প্রশ্নই আসে না। আমি সন্দিহান অভিযোগের সত্যতার ব্যাপারে। এ দিকে স্মিথ বলেন, ‘আমি চরম হতাশ। আমি খারাপ কিছু বলিনি প্যাট্রিকের উদ্দেশে। বিরাট এগিয়ে এসে আমাকে বলল, প্যাট্রিককে অপমান করেছি।’
রাচি টেস্টে ঘাড়ের আঘাত নিয়ে ব্যাটিং করেন কোহলি। তবে সুবিধা করতে পারেননি। তার আউটের পর উৎসব শেষে স্মিথ নিজের কাঁধে হাত দেন। বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে পারেনি সিরিজের ব্রডকাস্টার প্রতিষ্ঠান স্টার স্পোর্টস। ধারাভাষ্যকার লক্ষ্মণ স্মিথের কাঁধে হাত তোলাকে কোহলিকে অপমান হিসেবে চালিয়ে দেন। পরে বিষয়টির সুরাহা হয়েছে টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে। দেখা গেছে, কাঁধে হাত তোলার একটু আগে উৎসব করতে গিয়ে সতীর্থের দ্বারা আঘাত পান। পরে স্টার স্পোর্টস আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমাও চেয়েছে স্মিথের কাছে।
এর আগে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্মিথের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেন কোহলি। কিন্তু তিনি কোনো প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হন।
চলমান সিরিজে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগের উল্লেখ করে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ অস্ট্রেলিয়া একহাত নিয়েছে কোহলিকে। তারা অভিযোগ করেছে কোহলি কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না। উল্টো সব কিছুর জন্য মিডিয়াকে দায়ী করছেন। মূলত কোহলির চরিত্র পুরোপুরিই মিলে যায় ট্রাম্পের সাথে।