ফেসবুকে আপনার নামে একাধিক অ্যাকাউন্ট দেখলে সাবধান হন। দুর্বৃত্তরা প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিতে ব্যবহারকারীর নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলছে।
সম্প্রতি তথ্য-পরিচয় চুরি করার নতুন একটি কৌশল (স্ক্যাম) ফেসবুকে ছড়িয়েছে। প্রতারণার এ কৌশলকে বলা হচ্ছে ‘অ্যাকাউন্ট ক্লোনিং’।
ফেসবুক ক্লোনিংয়ে ব্যবহারকারীর নাম ও প্রোফাইলের ছবি কপি বা নকল করে নতুন একটি অ্যাকাউন্ট খোলে দুর্বৃত্তরা। ওই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আসল অ্যাকাউন্টের পার্থক্য সহজে ধরা যায় না।
অ্যাকাউন্ট তৈরির পর ব্যবহারকারীর ছদ্মবেশে বন্ধু ও পরিবারের লোকজনকে বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ (ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট) জানায়। এমনকি ফেসবুকে চ্যাটও শুরু করে। একপর্যায়ে অর্থ চেয়ে বসে। এমনকি ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগের সময় বিভিন্ন লিংক শেয়ার করে অন্যদের সঙ্গে তা শেয়ার করতে বলে। এভাবে একজনের প্রোফাইল থেকে আরেক প্রোফাইলে এ স্ক্যাম ছড়ায়। ফেসবুক যোগাযোগে নানা রকম প্রলোভন দেখানো হয়।
ফেসবুকে যা শেয়ার করবেন না:
যাঁরা ফেসবুক ব্যবহার করেন, তাঁদের কিছু নিয়মনীতি জেনে রাখা কর্তব্য। এতে তাঁর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা যেমন সুরক্ষিত থাকে, তেমনি দুর্বৃত্তদের কুনজর থেকে নিরাপদ থাকা যায়। সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরা ফেসবুকে নিরাপদ থাকার পাঁচটি নিয়মের কথা বলেছেন। ফেসবুকে যোগাযোগ ও শেয়ার করার আগে এগুলো মনে রাখা উচিত।
১. ফেসবুকে বাড়ির ঠিকানা নয়
ফেসবুকে বাড়ির ঠিকানা দিয়ে বিপদ ডেকে আনার কোনো মানে হয়? ফেসবুক বন্ধু তালিকায় সবাই যে প্রকৃত বন্ধু, তা কিন্তু নয়। অনেক অপরিচিত ও আগন্তুকের কাছে বাড়ির ঠিকানা প্রকাশ হয়ে যেতে পারে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজেকে এতটা উজাড় করে দেওয়াটা ঠিক নয়।
২. নিজের পাসওয়ার্ড নিজের কাছেই থাক
অবিশ্বাস্য মনে হলেও অনেকে ফেসবুকে পাসওয়ার্ড বিনিময় করেন। হয়তো কাছের বন্ধু বা ব্যক্তিগত বার্তা আদান-প্রদান করার সময় পাসওয়ার্ড লিখে বিনিময় করেন। বন্ধু কখন শত্রু হয়, কে জানে! এ ছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলেন, আলাপচারিতায় পাসওয়ার্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিনিময় করাটা ঝুঁকির মধ্যে থাকে। কারণ, এসব নজরদারি করা হতে পারে।
৩. অসংগত ছবি শেয়ার বিপদ ডেকে আনে
ফেসবুকে কাউকে হেয় করে ছবি বা মন্তব্য প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকুন। নিজের বা পারিবারিক অসংগত ছবিও সেখানে দেবেন না। এ ছাড়া শেয়ার করার সময় কোনো অসংগত ছবি শেয়ার করা হচ্ছে কি না, তা খেয়াল রাখুন। কারণ, আপনার ফেসবুকে শেয়ার করা অসংগত ছবিগুলো আপনার গুরুত্বপূর্ণ কন্টাক্ট, সহকর্মী ও চাকরিদাতার নজরে তো আসতেই পারে। অযথা অসংগত ছবি শেয়ার করে ঝামেলায় কেন জড়াবেন?
৪. বর্তমান অবস্থান ও সম্পর্ক গোপন রাখুন
আপনি কি একা? অনেকেই এটা খোঁজ করে আপনার ওপর নজরদারি করতে পারে। কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন—এসব তথ্য এবং আপনার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে তথ্য জানা থাকলে দুর্বৃত্তদের পক্ষে আপনার ওপর নজরদারি করা সহজ হতে পারে। ব্যক্তিগত তথ্য যতটা সম্ভব কম শেয়ার করুন।
৫. জন্ম তারিখ ও জন্মস্থান গোপন রাখুন
আপনার জন্ম তারিখ ও জন্মস্থানের মতো ব্যক্তিগত তথ্যগুলো ফেসবুকে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য জানা সহজ হয়। সাইবার দুর্বৃত্তদের কুনজর থেকে বাঁচতে একটু সতর্কতা আপনাকে একধাপ এগিয়ে রাখবে।