চীনে করোনাভাইরাস মহামারি হানা দেওয়ার এক বছর পর চীনের অর্থনীতি আবার সচল হয়েছে। এই অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের পেছনে সরকারের নেওয়া ঋণ এবং চীনা ধনীদের ব্যয় করা বিপুল পরিমাণ অর্থ বড় ভূমিকা রেখেছে। আজ রবিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবে চীনের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ার পর এক বছর অতিক্রম হয়ে দ্বিতীয় বছরে পড়েছে চীন। দেশটির ২৭ বছর বয়সী পান রুন পিং হলেন পানীয় বিক্রেতা। তার পানশালায় বিয়ার মদ্যপানীয় বিক্রি করেন। তিনি বলেন, “চীনে অথনীতির ভিত “শক্ত পাথরের মতো, ভাইরাস তাকে পরাস্ত করতে পারবে না।”
চীনের ঝৌ সি ই হলেন আরেক ব্যবসায়ী। তিনি চামড়ার ব্যবসা করেন। তার ৭ তলার ফ্ল্যাট বাড়িতেই ঝৌ-এর স্টুডিও রয়েছে। সেখান থেকে তিনি চামড়ার হাতব্যাগ আর ওয়ালেট বানান। এখন ওয়ালেট আগের মতো বিক্রি হতে শুরু করেছে।
ঝৌ সি ই‘র মতো ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য এটি একটি বড় সুখবর। মানুষ নতুন করে তাকে ব্যাগের অর্ডার দিতে শুরু করেছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানার যে গাড়ি নির্মাণ সংস্থায় তার স্বামী কাজ করে সেখানে আবার ক্রেতার ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। ফলে তাদের ব্যবসায় গতি এসেছে।
বিবিসির ওই খবরে বলা হয়, চীনে করোনাভাইরসে আক্রান্তের সরকার যে হিসাব দিয়েছিল সেই সংখ্যা নিয়ে প্রথম দিকে ব্যাপক সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা যাই হোক, চীন দ্রুত এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে।
খবরে আরও বলা হয়, ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশটির কোন কোন অঞ্চলে কঠোর লকডাউন দেওয়ার পাশাপাশি উন্নত নজরদারি ব্যবস্থা ও গণহারে পরীক্ষা চালানো হয়েছে। চীনই একমাত্র দেশ যেখানে ব্যাপকমাত্রায় করোনা পরীক্ষা চালানো হয়েছে।
চীনের সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, দেশটিতে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার হয়েছে দ্রুতগতিতে। তবে অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন, অর্থনীতি সবক্ষেত্রে সমানভাবে সচল হয়নি।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল পেট্টিস বলেন,”চীনের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন অনেকটা একপেশে। তিনি আরও বলেন, চীন সরকার অবকাঠামো বা শিল্প উৎপাদন চালু রাখতে প্রথমেই ঋণের অর্থ জুগিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর যে কৌশল নিয়েছে সেটাই এই ভারসাম্যহীনতার একটা কারণ। এটা স্পষ্ট যে ভাইরাস মহামারির আগে চীনে যে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পরিবেশ ছিল, সেটা মানুষ আবার অনেকাংশে ফিরে পেয়েছে। ফলে এটা স্পষ্ট যে ২০২০ সালে চীনই পৃথিবীর একমাত্র বড় অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে।