বাংলাদেশ ঋতুবৈচিত্র্যের দেশ। এখানে প্রতি দুই মাসে একেকটি ঋতু পরিবর্তন হয়। পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার পরিবর্তন আসে।
আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে স্বাভাবিকভাবেই অনেকে সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত হয়। আবার সামান্য ওষুধ সেবনে দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। এর মধ্যে বিশ্বব্যাপী করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ শুরু হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতেই আমাদের দেশেও হুহু করে বাড়ছে সংক্রমণের হার। ঋতু পরিবর্তিন হচ্ছে। অনেকেই সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে। সুতরাং এটা মনে রাখতে হবে যে, সর্দি-কাশি মানেই করোনা নয়।
যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু উপসর্গ এক হলেও সাধারণ সর্দি-কাশি, সাধারণ ফ্লুয়ের সঙ্গে করোনাভাইরাসের যথেষ্ট অমিল রয়েছে। তাই দুশ্চিন্তা না করে করোনাভাইরাস, সাধারণ ফ্লু ও সাধারণ সর্দি-কাশির উপসর্গ-সহ যাবতীয় তথ্য দেখে নিন-
করোনাভাইরাস :
উপসর্গ – ১) জ্বর ২) শুকনো কাশি ৩) পেশিতে ব্যথা ৪) ক্লান্তি।
কম সাধারণ উপসর্গ – ১) মাথা যন্ত্রণা ২) কাশির সঙ্গে রক্ত ওঠা ৩) ডায়েরিয়া।
ইনকিউবেশন পিরিয়ড (শরীরে ভাইরাস ঢোকা থেকে প্রথম উপসর্গ দেখা দেওয়া পর্যন্ত সময়) – এক থেকে ১৪ দিন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তা ২৪ দিনও হতে পারে।
জটিলতা – করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে পাঁচ শতাংশের অবস্থা জটিল হয় (অ্যাকিউট নিউমোনিয়া, সেপটিক শক, মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর ও রেসপিরেটরি ফেলিওর)।
সুস্থ হওয়ার সময় – সাধারণত দু’সপ্তাহের মধ্যে সেরে ওঠেন আক্রান্ত ব্যক্তি। তবে জটিলতা বেশি হলে সুস্থ হতে ২-৬ সপ্তাহ সময় লাগে।
চিকিৎসা বা প্রতিষেধক – কোনও প্রতিষেধক বা অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ নেই। শুধুমাত্র উপসর্গের চিকিৎসা করা যায়।
সিজনাল ফ্লু :
উপসর্গ – ১) জ্বর ২) শুকনো কাশি ৩) পেশিতে ব্যথা ৪) ক্লান্তি ৫) গলা ব্যথা ৫) মাথা যন্ত্রণা ৬) নাক দিয়ে জল পড়া ও বদ্ধ নাক।
কম সাধারণ উপসর্গ – ১) ডায়েরিয়া ২) বমি।
ইনকিউবেশন পিরিয়ড – ১-৪ দিন।
জটিলতা – ১০০ জনের যদি সাধারণ ফ্লু হয়, তাহলে একজনের অবস্থা জটিল হয়।
সুস্থ হওয়ার সময় – সাধারণত সুস্থ হতে এক সপ্তাহ সময় লাগে। তবে জটিল ক্ষেত্রে দু’সপ্তাহ সময় লাগে।
চিকিৎসা বা প্রতিষেধক – বার্ষিক ফ্লু প্রতিষেধক রয়েছে।
সাধারণ সর্দি-কাশি :
উপসর্গ – ১) নাক দিয়ে জল পড়া ও বদ্ধ নাক ২) হাঁচি ৩) গলা ব্যথা।
কম সাধারণ উপসর্গ – ১) হালকা জ্বর ২) পেশি বা শরীরে ব্যথা ৩) মাথা যন্ত্রণা ৪) ক্লান্তি।
ইনকিউবেশন পিরিয়ড – ২-৩ দিন।
জটিলতা – অত্যন্ত বিরল।
সুস্থ হওয়ার সময় – অধিকাংশ ক্ষেত্রে এক সপ্তাহ সময় লাগে। বড়জোর তা ১০ দিন হতে পারে।
চিকিৎসা বা প্রতিষেধক – কোনও চিকিৎসা নেই। শুধুমাত্র উপসর্গের চিকিৎসা করা হয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : আপনার যদি নাক দিয়ে জল পড়ে ও নাক বদ্ধ থাকে বা আপনি হাঁচছেন, তাহলে আপনি করোনায় আক্রান্ত হননি, সেই সম্ভাবনা বেশি।