...
বৃহস্পতিবার, মে ১৬, ২০২৪

করোনাভাইরাস: পোড়ানো হচ্ছে মরদেহ, দেখার সুযোগ নেই স্বজনদের

যা যা মিস করেছেন

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ভাইরাসটির উৎস চীনের উহান শহরে এর প্রকোপ প্রায় মহামারি আকার ধারণ করেছে। করোনাভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে বলে মরদেহ পোড়ানোর মাধ্যমে শেষকৃত্য সম্পাদনের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

Uhan

ফলে নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই মরদেহ পোড়াতে হচ্ছে শ্মশানকর্মীদের। কাজটি এতটাই সুরক্ষিতভাবে করা হচ্ছে যে, প্রিয়জনের মুখ শেষবারের মতো দেখারও সুযোগ পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।

গত ১ ফেব্রুয়ারি চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে যারা মারা যাচ্ছে, তাদের মরদেহ অবশ্যই পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এ কারণে দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে শেষকৃত্যে নিয়োজিত কর্মীদের। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল, বাড়িঘর থেকে করোনাভাইরাসে মৃতদের মরদেহ সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলছেন।

ইউন নামে উহানের এক শ্মশানকর্মী জানান, তারা প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০টি মরদেহ পোড়াচ্ছেন। গত ২৮ জানুয়ারি থেকে তিনি ও তার প্রায় সব সহকর্মীই সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘণ্টাই কাজ করছেন। এমনকি সামান্য বিশ্রাম নেয়ার জন্য বাড়ি ফেরারও সময় পাচ্ছেন না কেউ। এ কাজের জন্য শিগগিরই আরও লোকবল দরকার বলেও জানান তিনি।

সংক্রমণ এড়াতে মরদেহ পোড়ানোর কাজে নিয়োজিতদের ভাইরাসপ্রতিরোধী বিশেষ ধরনের পোশাক দেয়া হয়েছে। এই পোশাক ভাইরাস থেকে রক্ষা করলেও রয়েছে অন্য সমস্যা। ইয়ুন বলেন, ‘প্রতিরোধী পোশাক পরায় আমরা দীর্ঘ সময় কিছু খেতে বা পান করতে পারি না। কারণ খেতে হলে বা বাথরুমে যেতে হলে ওই পোশাক খুলে ফেলতে হয়। ভাইরাসপ্রতিরোধী এই পোশাক একবারের বেশি ব্যবহারও করা যায় না।’

উহানের স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শহরটির শ্মশানকর্মীদের জন্য ভাইরাসপ্রতিরোধী পোশাকের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। অনেকেই রেইনকোট পরে বিকল্প ব্যবস্থার চেষ্টা করছেন। এছাড়া, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে প্রিয়জনের মরদেহ দেখারও সুযোগ দেয়া হচ্ছে না পরিবারের সদস্যদের।

বুধবার প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মারা গেছেন অন্তত ৭০ জন। এ নিয়ে চীনের মূল ভূখণ্ড ও এর বাইরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬৪ জন। চীনে নতুন করে আরও ২ হাজার ৯৮৭ জনসহ মোট ২৭ হাজার ৩৭৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্বের ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।

বুধবার মৃত ৭০ জনের সবাই হুবেই প্রদেশের। এ নিয়ে প্রদেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪৯ জনে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হুবেই প্রদেশে ১৪ হাজার ৩১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭৫৬ জনের অবস্থা গুরুতর।

চীনের মূল ভূ-খণ্ডের বাইরে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন দু’জন। মঙ্গলবার হংকংয়ে ৩৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি প্রাণ হারান। তিনি কিছুদিন আগেই করোনাভাইরাসের উৎসস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ফিরেছিলেন। এর আগে, গত সপ্তাহে ফিলিপাইনে মারা যান উহানফেরত আরও একজন।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হওয়া এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন-ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.