যে কোনো উৎসবে রাজধানীতে তৎপরতা বাড়ে মৌসুমি অপরাধীদের। ঈদ সামনে রেখে এবারও তৎপর হয়ে উঠেছে একাধিক চক্র। কোটি কোটি টাকার জাল নোট যারা বাজারে ছড়াচ্ছে তারাসহ বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে সক্রিয় অজ্ঞান ও মলমপার্টির সদস্যদের ধরতে মাঠে নেমেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ঈদের কেনাকাটা শেষে বাসায় ফেরার সময় ছিনতাইসহ এসব মৌসুমি অপরাধীকে ধরতে অভিযান শুরু করেছে ডিবির ৩২ টিম। কাজ করছে থানা পুলিশ ও র্যাবও। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপে এ তথ্য জানা যায়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, ঈদ ও রমজানে কেনাকাটা, ব্যবসাবাণিজ্য, অর্থের লেনদেন বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে চুরি, ছিনতাই, দস্যুতাসহ মলম ও অজ্ঞানপার্টির তৎপরতাও বৃদ্ধির শঙ্কা থাকে। একটু অসতর্কতার জন্য অর্থ ছিনিয়ে নিতে পারে দুষ্কৃতকারীরা। অনেক সময় অর্থের জন্য প্রাণও চলে যায়। তাই অর্থ বহন ও উত্তোলনে সতকর্তা অবলম্বনের নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি। বড় অংকের অর্থ বহনে মানি এস্কর্ট সেবা দিচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
জাল টাকা তৈরির সঙ্গে জড়িত চক্রগুলো সারা বছর তৎপর থাকলেও উৎসবে বড় টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে তারা। এ সময় মুদি দোকান থেকে শপিংমল সর্বত্র থাকে উপচেপড়া ভিড়। এই সুযোগে কোটি কোটি টাকার জাল নোট মাঠে ছাড়ে চক্রগুলো। অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ব্যাংকে লেনদেন ও এটিএম বুথেও জাল টাকা ছড়িয়ে দিচ্ছে।
গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, রমজান ও ঈদ সামনে রেখে ঢাকায় সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে অজ্ঞান ও মলমপার্টির সদস্যরা। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে মৌসুমি অপরাধীরা। বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীতে জড়ো হচ্ছে কেউ কেউ। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এসব তথ্য জেনে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে গোয়েন্দা পুলিশের প্রতিটি টিম।
কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতারের পর কারামুক্ত হয়ে তারা একই কাজে জড়িয়ে পড়ছে। জামিনে বের হওয়ার পর তাদের মধ্যে সংশোধনের আলামত দেখা যাচ্ছে না।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রাহুল পাটোয়ারী যুগান্তরকে বলেন, ঈদকে টার্গেট করে জাল টাকার কারবারি, অজ্ঞান ও মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাই নগরবাসীর নিরাপত্তায় এসব মৌসুমি অপরাধীকে গ্রেফতারে কাজ শুরু করেছি। ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতায় রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম কমে আসবে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ জানায়, সাধারণ জনগণকে সতর্ক হতে হবে। কারণ তারা পান, ডাব, শরবত, মসলা-মুড়ি ও নানা ধরনের মুখরোচক খাদ্যের বিক্রেতা হিসেবে হকারি করে। ভদ্র চেহারার যাত্রীবেশে গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এমনকি বিমানবন্দরে ঘুরে যাত্রীদের ঘায়েল করে তারা।