...
বৃহস্পতিবার, মে ১৬, ২০২৪

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা:অনুমতি মেলেনি ব্যক্তিগত চিকিৎসকের

যা যা মিস করেছেন

ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুমতি মেলেনি এখনও। তবে শুক্রবার-শনিবার মধ্যেই ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করবেন বলে কারা ও বিএনপির দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জেল কোড অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে একটি আবেদন করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কারা বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে কারা অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা জানান, ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ কোনও আবেদন এখনও (বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা) পায়নি। আবেদন করা হলে কারা কর্তৃপক্ষ সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সেখান থেকে অনুমতি মিললে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছাড়া এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিতে অপারগ কারা কর্তৃপক্ষ। কারা সূত্র আরও জানায়, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন। তাকে ওষুধসহ বিভিন্ন পথ্য খাওয়ানোর চেষ্টা চলছে। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে তিনি ওষুধ খেতে গড়িমসি করেন।

বুধবার বিকাল ৪টা ৩৫ মিনিটে কারাগারে প্রবেশ করেন খালেদা জিয়ার ৬ আত্মীয়। এরা হলেন- খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও ছোট মেয়ে জাহিয়া রহমান, খালেদা জিয়ার বড় বোন সেলিমা ইসলাম, ভাই শামীম এস্কান্দার, ভাবি কানিজ ফাতেমা ও ভাগ্নে অভিক এস্কান্দার। সাংবাদিকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা কারাগার ত্যাগ করেন।

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে বুধবার দুপুরে কথা হয়। তিনি তার জানান, আমরা যেসব পরীক্ষা দিয়েছি সেগুলো করানোর পর কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে রিপোর্ট দেবে। ওই রিপোর্ট দেখার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। খালেদা জিয়ার জন্য যে এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষার সুপারিশ করা হয়েছে তা কোন হাসপাতালে করালে ভালো হয় জানতে চাইলে ডা. শামসুজ্জামান শাহীন বলেন, মানসম্মত যেকোনো হাসপাতালে করালেই চলবে।

ড. শাহীন বলেন, আগে থেকেই খালেদা জিয়া রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও অসটিও আর্থ্রাইটিসে ভুগছেন। নতুন করে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। আগে হাঁটুতে ব্যথা ছিল। এখন হাত এবং ঘাড়ে ব্যথা হচ্ছে। ব্যথানাশক তিন-চার পদের নতুন ওষুধ লিখে দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দাখিল করা প্রতিবেদনে কী হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উনি যেসব অভিযোগ করছেন, যেমন-কারাগারের নিুমানের ওষুধ, শক্ত বিছানার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পরীক্ষার পর তার শরীরে যেসব রোগের উপসর্গ পাওয়া গেছে, যেমন- হাত-পা শিনশিন-ঝিনঝিন, হাঁটু ব্যথা, পা ব্যথা, ঘাড়, কোমর ব্যথা-এসবই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। পাশাপাশি কিছু ওষুধ, ব্যায়াম এবং থাকার জন্যে আরামদায়ক বিছানার সুপারিশ করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ডা. শাহীন বলেন, শক্ত বিছানার জন্যও তার কোমরে ব্যথা হতে পারে।

 

কারা সূত্র জানায়, বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা খালেদা জিয়ার রক্ত পরীক্ষা ও এক্স-রের যে সুপারিশ করেছেন তা কবে কোথায় করানো হবে সে বিষয়ে এখনও এখনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। সরকারের সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এখনও ব্যক্তিগত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। খালেদা জিয়া বলেছেন, ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তিনি ওষুধ পাল্টাবেন না। এখন দেখা যাক, জেলকোডে কী আছে? আমাদের ডাক্তাররা কী বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা আমার কাছে যে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সরকারি সব কাজ তো সঙ্গে সঙ্গেই করা যায় না। সময় লাগে।’

খালেদা জিয়াকে বিছানা বদলের যে পরামর্শ বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা দিয়েছেন সে ব্যাপারে অগ্রগতি জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এসব দেখার দায়িত্ব আমার না। এজন্য কারা কর্তৃপক্ষ আছে। তাদের সঙ্গে কথা বলুন। আমি বলতে পারি, ডাক্তাররা যে পরামর্শ দিয়েছেন সে অনুযায়ী সবই হচ্ছে। ডাক্তারদের ব্যবস্থাপত্রের বাইরে কিছু হচ্ছে না।’ এ বিষয়ে জানতে বুধবার দুপুরে কারা সদর দফতরে গিয়েও আইজির (প্রিজন্স) দেখা পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে এসএমএস পাঠানো হলেও সাড়া দেননি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে সেবা নিতে সুযোগ না দেওয়ায় তিনি অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘সরকার চায় না তার (খালেদা জিয়ার) সঠিক চিকিৎসা হোক।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দ্বারা সেবা নিতে যে আচরণটি করা হচ্ছে, তাতে এটি পরিষ্কার সরকার খালেদা জিয়ার সঠিক চিকিৎসা করতে দিতে চায় না। এর একটিমাত্র কারণ, তারা তাকে ভয় পায়। কারণ, তিনিই একমাত্র গণতন্ত্র রক্ষা এবং এই দুঃশাসনকে পরাজিত করতে পারেন।’

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রায় ঘোষণার পরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.