পাটশিল্পকে বিএনপি সরকার ধ্বংস করতে চেয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের পাটকলগুলো ক্রমান্বয়ে বন্ধ করে দেয়। ৯৬ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় এলাম বন্ধ পাটকলগুলো খুলে দিতে শুরু করলাম। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে আদমজী জুট মিল বন্ধ করে দিয়েছিল। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা আবারও তা খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।
মঙ্গলবার (৬ মার্চ) সকালে জাতীয় পাট দিবসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাটশিল্পর সঙ্গে দেশের অর্ধকোটি কৃষক জড়িত। পরিবেশবান্ধব এই পাটের চাহিদা কখনও শেষ হতে পারে না। আমরা পাটের ওপর গবেষণা করার ব্যবস্থা নিয়েছি। আজকে এই পাট গবেষণার ফলে অনেক ধরনের পাট পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। এই সম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে দ্রুত যেন দেশের উন্নতি হয়, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কৃষকরা যেন পাট চাষে মনোযোগী হয় সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। পাট উৎপাদন, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। আমরা বন্ধ থাকা খুলনায় চারটি ও কিশোরগঞ্জের একটি পাটকল খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি । ’
পাটকল বন্ধের শর্তে বিশ্বব্যাংক থেকে বিএনপি-জামাত জোট সরকার অর্থ নিয়ে পাটশিল্পকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল এ তথ্য জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আবার বন্ধ পাটকলগুলো চালু করছে।
পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে অন্যান্য শিল্পের মতো পাটশিল্প থেকেও প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পাট দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাটের তৈরি শাড়ি পড়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজে পাটের পণ্য ব্যবহারের কথা জানিয়ে উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী পাটপণ্য ব্যবহার করতে সবাইকে উৎসাহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাটশিল্পকে বিএনপি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিলো আর তাই ক্ষমতায় থাকাকালীন তারা পাটকলগুলো ক্রমান্বয়ে বন্ধ করে দেয়।
পাটকল বন্ধের শর্তে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলো তারা বলে জানান শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সরকার পাটকল চালু করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
অন্যান্য শিল্পের মতো পাটশিল্প থেকেও প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাট পণ্য উৎপাদনের জন্য যে যন্ত্রপাতি ব্যবহার হয় তা অত্যন্ত পুরনো । আমরা পাট পণ্য উৎপাদনের জন্য নতুন মেশিন ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়া, পাটকলগুলোর তিন হাজার কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ ছিল । আমরা তা মওকুফ করে দিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাংকের ঋণ শোধ করার ব্যবস্থা নিয়েছি। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পাটের চাদিহা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পণ্যের মোড়কে পাটজাত পণ্য বাধ্যতামূলক আইন ২০১০ করে দিয়েছে।’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার পরিহিত শাড়ি, ব্যবহৃত জুতা ও সঙ্গে থাকা ব্যাগটি পাটের বলে জানান।