ঢাকা মহানগরীর সব গাড়ির হাইড্রোলিক হর্ন ১৫ দিনের মধ্যে থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এ সংক্রান্ত মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের পর রবিবার (৮ অক্টোবর) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেসব গাড়িতে এখনও হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করা হচ্ছে ওইসব গাড়ির মালিকদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নিকটস্থ থানায় হর্ন জমা দিতে এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জমা হওয়া হাইড্রোলিক হর্ন ধবংস করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ইতোপূর্বে হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করা সংক্রান্ত আদালত যে আদেশ দিয়েছেন তা বহাল আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকাসহ সারাদেশে শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার। এই হর্ন জব্দ করতে এবং তার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। তারই প্রেক্ষিতে আদালতে আজ পুলিশ কমিশনার এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশাসন শত শত হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করেছে। কিন্তু বর্তমান আইনের আওতায়, যিনি ব্যবহার করছেন তাকে একশ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। এতে ব্যবহারকারীরা জরিমানা দিয়ে আবারও ওই হর্ন ব্যবহার করছেন। ফলে মালিকদেরকে হর্ন ব্যবহার থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। এরপরই আদালত এ আদেশ দেন।’
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, আমাদের যে মোটর ভেহিকেল বিধি আছে সেখানে বলা আছে, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ব্রিগেড, পুলিশের গাড়ি ছাড়া কোনও গাড়িতে এই উচ্চ হর্ন ব্যবহার করা যাবে না। এরই প্রেক্ষিতে এর আগে আদালত সাত দিনের নোটিশ দিয়েছিলেন। এই সাত দিনের মধ্যে প্রশাসন এই হর্নগুলো জব্দ করবে এবং তা ব্যবহার বন্ধ করবে। সেগুলো কিছু কিছু বন্ধ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৩ আগস্ট বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। যানবাহনে ব্যবহৃত হাইড্রোলিক হর্নের ব্যববহার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধেরও নির্দেশ দেন আদালত।
শব্দদূষণ থেকে রাজধানীবাসীকে মুক্তি দিতে যানবাহনে ব্যবহৃত হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। রুলে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং সারাদেশে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজিপি, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, ট্রাফিকের যুগ্ম কমিশনার, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান, ঢাকার ট্রাফিকের চার ডিসিসহ ২০ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।