মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণে মাধ্যমিকের মত উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষাতেও এবার পাসের হার কমেছে; সার্বিকভাবে পাস করেছে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী।
দ্বাদশ শ্রেণির গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পর্যায়ে পা রাখতে যাওয়া এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন মোট ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী।
মাদ্রাসা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ৮১৫ জন শিক্ষার্থী। আর কারিগরিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৬৬৯ জন শিক্ষার্থী।
রবিবার সকাল ১০ টার দিকে সব বোর্ড চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন। দুপুর ১টার দিকে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী।
সকালে ফল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হলেও দুপুর ২টার পর শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইট,নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও টেলিটক মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে পারবেন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান জানান, ‘শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইট, নিজস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানা যাবে।’
এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। গত ২ এপ্রিল থেকে ১৫ মে এইচএসসির তত্ত্বীয় এবং ১৬ থেকে ২৫ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এক নজরে ফলাফল
২০১৭ | ২০১৬ | |||
বোর্ড | পাশের হার (%) | জিপিএ-৫ (জন) | পাশের হার (%) | জিপিএ-৫ (জন) |
ঢাকা | ৬৯.৭৪ | ১৮৯৩০ | ৭৩.৫৩ | ২৮১১০ |
রাজশাহী | ৭১.৩০ | ৫২৯৪ | ৭৫.৪০ | ৬০৭৩ |
কুমিল্লা | ৪৯.৫২ | ৬৭৮ | ৬৪.৪৯ | ১৯১২ |
যশোর | ৭০.০২ | ২৪৪৭ | ৮৩.৪২ | ৪৫৮৬ |
চট্টগ্রাম | ৬১.০৯ | ১৩৯১ | ৬৪.৬০ | ২২৫৩ |
বরিশাল | ৭০.২৮ | ৮১৫ | ৭০.১৩ | ৭৮৭ |
সিলেট | ৭২.০০ | ৭০০ | ৬৮.৫৯ | ১৩৩০ |
দিনাজপুর | ৬৫.৪৪ | ২৯৮৭ | ৭০.৬৪ | ৩৮৯৯ |
মাদ্রাসা বোর্ড | ৭৭.০২ | ১৮১৫ | ৮৮.১৯ | ২৪১৪ |
কারিগরি বোর্ড | ৮১.৩৩ | ২৬৬৯ | ৮৪.৫৭ | ৬৫৮৭ |
ডিআইবিএস (ঢাকা) | ৭১.৫৮ | ২৪৩ | ৮১.৪৬ | ৩২৫ |
মোট | ৬৮.৯১ | ৩৭৯৬৯ | ৭৪.৭০ | ৫৮২৭৬ |
ফল জানা যাবে যেভাবে
গত কয়েক বছরের মতো এবারও কোনো শিক্ষা বোর্ড থেকে ফলাফলের হার্ডকপি সরবারহ করা হবে না।
সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ই-মেইলে কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের সফট কপি সরবারহ করা হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করতে পারবে।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট ছাড়াও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের ইআইআইএন ব্যবহার করে ফলাফলের কপি ডাউনলোড করতে পারবে।
যে কোনো মোবাইল থেকে এসএসএম করেও এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল জানতে পারবেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এ জন্য HSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
আলিমের ফল জানতে Alim লিখে স্পেস দিয়ে Mad স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল পাওয়া যাবে।
এছাড়া এইচএসসি ভোকেশনালের ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে Tec লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
ফল পুনঃনিরীক্ষা
রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে আগামী ২৪ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত এইচএসসি ও সমমানের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা যাবে।
ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে RSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
ফিরতি এসএমএসে ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর (পার্সোনাল আইযেন্টিফিকেশন নম্বর-PIN) দেয়া হবে।
আবেদনে সম্মত থাকলে RSC লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
প্রতিটি বিষয় ও প্রতি পত্রের জন্য দেড়শ’ টাকা হারে চার্জ কাটা হবে।
যে সব বিষয়ের দুটি পত্র (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র) রয়েছে যে সকল বিষয়ের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করলে দুটি পত্রের জন্য মোট ৩০০ টাকা ফি কাটা হবে।
একই এসএমএসে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে, এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে ‘কমা’ দিয়ে লিখতে হবে।