ঈদের নতুন জামা-জুতা কেনার পাশাপাশি ত্বকেরও কিছু বাড়তি যত্ন নিতে হয়। তাই এখন সময় ত্বকের যত্নের। রোজার এই এক মাস অনেক সময়ই নানা কাজে ত্বকের যত্ন নেওয়া হয়ে ওঠে না। তাছাড়া অপর্যাপ্ত পানি পান, অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া ইত্যাদি কারণে ত্বকে নানান সমস্যা দেখা দেয়। তাই ঈদের কিছুদিন আগে থেকেই ত্বকের বাড়তি যত্ন নেওয়া উচিত।
কারণ ঈদের দিন শুধু নতুন পোশাক পড়লেই নিজেকে সুন্দর দেখাবে এমন নয়, প্রয়োজন ত্বকের সজীবতা।
স্বাভাবিক ত্বক যত্নে খুব বেশি পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না। শোবার আগে বেবি সোপ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। মুখ ধোয়ার পর স্কিনটনিক ও ফ্রেশনার লাগাবেন। সপ্তাহে কম করে তিনদিন ফেসপ্যাক লাগাবেন। ডিমের কুসুম অলিভ অয়েলের প্যাক লাগান। ১০ মিনিট পর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলে ক্রিম লাগান।
শোবার আগে মুখ গোলাপজলে তুলো ভিজিয়ে সারা মুখে লাগান। হাল্কা ওভার নাইটক্রিম লাগান। তৈলাক্ত ত্বক শোবার আগে মাইন্ড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোবেন। পুদিনা পাতার রস ও গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগান। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
শুষ্ক ত্বকে সাবান ব্যবহার করবেন না। ক্লেনিজং মিল্ক দিয়ে মুখমণ্ডল পরিষ্কার করুন। দুধের সর ও গোলাপ মিশিয়ে মুখে ম্যাসাজ করুন। পাঁচ মিনিট পর কুসুম গরম পানিতে তুলো ভিজিয়ে মুখ মুছে ফেলুন। ওভার নাইট ক্রিম লাগান।
শুকনো ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নরম কাপড় দিয়ে আস্তে আস্তে ঘষুন। মরা চামড়া উঠে আসবে। এবার লিপ বাম লাগিয়ে নিন। ঠোঁট নরম রাখতে দুধের সর লাগান।
হাতের যত্নে সপ্তাহে একদিন গোলাপজল আর গ্লিসারিন মিশিয়ে শোবার আগে দুই হাত ম্যাসাজ করুন। ভিটামিন ‘ই’ অয়ের বা আমন্ড-নখ এবং তার চারপাশে লাগান। নখ মজবুত হবে। যাদের হাত শক্ত এবং রুক্ষ হয়ে যাচ্ছে তারা হাতে ভাল করে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে শুতে যান।
চুলের যত্নে রাতে শ্যাম্প করার অভ্যাস থাকলে ঘুমানোর আগে চুল ভাল করে শুকিয়ে নিন। চুল শুকিয়ে গেলে ভাল করে আঁচড়ে হাল্কা বিনুনি বা পনি টেল বেঁধে শুতে যান।
রান্না ঘরের তেল-কালিও ত্বকের জন্যে ক্ষতিকারক। তাই গোসলের সময় বেবি বাথ সোপ ব্যবহার করতে পারেন। বেসনও ব্যবহার করতে পারেন।
পরামর্শ:
বিভিন্ন ফলের সমারোহে আমরা ইফতার সাজাই। আপনি জানেন কী এই ফল দিয়েই হতে পারে আপনার ত্বকচর্চা। ইফতার থেকে দু এক টুকরো ফল দিয়ে নিয়মমাফিক ব্যবহার করে সতেজতাকে ধরে রাখতে পারেন।
শসা: শসার বিকল্প মেলা ভার। শসা ভাল টোনারের কাজ করে। শসার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা পুদিনা পাতার রস ও মধু মিশিয়ে ফ্রেশনার হিসেবে ব্যবহার করুন।
আপেল: ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে আপেলের জুড়ি নেই। আপেলের একটু পেস্ট বা রসের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১০ মিনিট পর ধুয়ে দেখুন আপনার ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। এছাড়া ত্বক সজীব রাখার জন্য পর্যাপ্ত আপেল খান।
আঙুর: এ্যাসট্রিনজেন্ট ও ময়শ্চারাইজার হিসেবে আঙুরের স্থান অনেক উপরে। আঙুরের রস করে ফ্রিজে রাখবেন, ঠান্ডা অবস্থায় মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর সুতি কাপড় দিয়ে মুখটা মুছে নেবেন। কোন পানি লাগাবেন না। এতে ত্বকের ময়শ্চারাইজারের মাত্র ঠিক থাকবে।
এত গেল ঘরোয়ার যত্নের কথা। যারা এটুকুও করার সময় পান না তারা সময় বের করে চলে যেতে পারেন ভাল কোন পার্লারে। সেখানে অভিজ্ঞ ত্বক বিশেষজ্ঞ দ্বারা ত্বক পরীক্ষা করে ত্বক অনুযায়ী ফেশিয়াল বা কোন ধরনের মাস্ক আপনার উপযুক্ত তা করিয়ে নিতে পারেন। ফেশিয়াল ত্বকের গভীর থেকে ময়লা দূর করার পাশাপাশি ব্ল্যাক বা হোয়াইটের মতো বিব্রতকর ঝামেলা দূর করে, আর ত্বক হয়ে উঠে প্রাণবন্ত।