পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।তারা হলেন এহতেশাম ভোলা ও মনির। গ্রেপ্তারের সময় ভোলার কাছ থেকে একটি রিভলবার ও একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (২৭ জুন) ভোররাতে নগরীর বাকলিয়ার রাজাখালী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান মিতু হত্যার মিশনে এ দুজন সরাসরি অংশ নিয়েছিল। আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আগেই আটক দুই আসামি আনোয়ার ও ওয়াসিম স্বীকার করেছেন, তারা খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি এই এহতেশাম ভোলার কাছ থেকেই নিয়েছেন।
গত ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের ও আর নিজাম রোডে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় মাহমুদা আক্তার মিতুকে।
ওই ঘটনায় তার স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং মেরাদিয়ার হাজীপাড়ায় বাবুলের শ্বশুরবাড়িতে পুলিশের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে নানা খবরের মধ্যেই নতুন করে এ দুইজনকে গ্রেপ্তারের খবর এল।
গত শুক্রবার মধ্যরাতে পুলিশ বাবুলকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে ঢাকার ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করলে নানা প্রশ্নের জন্ম হয়।
পুলিশ বাবুলকেও ‘সন্দেহ করছে’ বলে এরপর পত্রিকায় খবর আসে, যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সন্দেহভাজন খুনিদের গ্রেপ্তারের পর তা যাচাইয়ের জন্যই বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
বাবুল বাড়ি ফেরার পরদিন রোববার মোতালেব মিয়া ওয়াসিম ও আনোয়ার হোসেন নামে আরও দুজনকে আলোচিত এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।
তারা ওইদিনই চট্টগ্রামের আদালতে ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি’ দিয়েছেন বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার সেদিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিতু হত্যাকাণ্ডে সাত থেকে আটজন জড়িত ছিলেন, তাদের মধ্যে দুজন হলেন ওয়াসিম ও আনোয়ার।
তিনি দাবি করেন, হত্যাকাণ্ডের পর মোটর সাইকেলে যেসন্দেহভাজন জঙ্গিদের হামলায় সম্প্রতি কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রামে সহকর্মীর স্ত্রী একই কায়দায় খুন হলে পুলিশের সন্দেহ হয় জঙ্গিদেরই।
আর বাবুল যেহেতু চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনের সময় জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নেতৃত্বে ছিলেন, সে কারণেও মিতু হত্যার পর ওই সন্দেহের কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছিলেন।
কিন্তু ওয়াসিম ও আনোয়ারকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা ‘পেশাদার অপরাধী’। তবে কার নির্দেশে তারা মিতুকে হত্যা করে থাকতে পারে- সে প্রশ্নের উত্তর সেদিন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার দেননি।
হত্যাকাণ্ডের পর শাহ জামান রবিন ও আবু নসুর গুন্নু নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। কিন্তু গত রোববার পুলিশ কমিশনার বলেন, ওই দুজনের সম্পৃক্ততা মিতু হত্যাকাণ্ডে নেই।
তিনজনকে পালাতে দেখা গিয়েছিল, ওয়াসিম তাদের একজন। সেই মিতুকে গুলি করে। আর আনোয়ার হলেন অনুসরণকারীদের একজন।