তাসলিমুল হাসান সিয়াম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত ঝিরঝির বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। ফলে পৌষের কনকনে ঠাণ্ডায় জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন ।
ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকরা জমিতে কাজ করতে পারছে না। এছাড়া মহাসড়কে দূরপাল্লা ও স্বল্পপাল্লার যানবাহনকে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে তিস্তা-ব্রহ্মপুত্রে নৌ-চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় জেলার ১৬৫টি চরাঞ্চলের মানুষ বিপাকে পড়েছেন। এদিকে শীতজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে প্রতিদিনই বাড়ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়াসহ ডায়েরিয়া, পাতলা পায়খানার মতো ঠাণ্ডাজনিত অসুখে।
শুক্রবার গাইবান্ধা সদর জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, দ্বিতল ভবনের নারী-পুরুষ ওয়ার্ড রোগীতে ভরে আছে। তাদের বেশিরভাগই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় বেডের ব্যবস্থা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক।
রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকাশে মেঘ না থাকায় সূর্যোদয় থেকে সূর্যান্ত পর্যন্ত রোদ থাকায় দিনে তেমন শীত অনুভূত হয় না। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই হালকা বাতাস, আর ঘন কুয়াশার কারণে তীব্র শীত নামে। রাত যত গভীর হয় শীতের তীব্রতা ততই বাড়তে থাকে। দিন-রাতে তাপমাত্রার এই তারতাম্যের কারণেই স্বর্দি, জ্বর, ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে মনে করছেন তারা। ফলে শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্বজনরা।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (এমও) ডা. শিহাব জানান, প্রকৃতির নিয়মে আবহাওয়া পরিবর্তিন হচ্ছে। তাই দিনে গরম ও রাতে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। যা আমাদের অনেকের শরীরই মানিয়ে নিতে পারছে না। এটি শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার অন্যমত কারণ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রত্যেককেই গরম কাপড় পরিধান, ঠাণ্ডা পানি পরিহারসহ পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার (এমও) ডা. রফিউল আলম জানান, বর্তমানে নিউমোনিয়া এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অর্ধশতাধিক শিশু ও বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া গত এক মাসে ঠাণ্ডাজনিত অসুখে চারশিশু ও এক বৃদ্ধসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।