মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

নেত্রকোনায় ২ কিশোর শ্রমিকের কিলঘুষি ও ধস্তাধস্তি, একজনের মৃত্যু

যা যা মিস করেছেন

স্টাফ রিপোর্টার : নেত্রকোনায় দুই কিশোর শ্রমিকের কিলঘুষি ও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ইসমাইল (১৫) নামে কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।

নিহত কিশোর শ্রমিক ইসমাইল পৌরশহরে ছোটগাড়া এলাকার মো. আ. বারেকের ছেলে। অভিযুক্ত আরেক কিশোর আল মামুন (১৪) সদর উপজেলার হরগাতি গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে।

বুধবার (৩০ মার্চ) নিহতের ময়না তদন্ত ওই হাসপাতালে সম্পন্ন করা হবে বলে জানায় পুলিশ। এরআগে মঙ্গলবার দিনগত রাত ৯টার দিকে নেত্রকোনার পৌরশহরে বড়বাজারস্থ ‘সালতি ক্যাফে ও রেস্টুরেন্টে’ এঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে গেলে ওই রেস্টুরেন্টে শিশু-কিশোর শ্রমিক কাজ করতে দেখা গেছে। শ্রমআইনে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ থাকলেও এবং বিশ্রামসহ একজন কিশোর শ্রমিক দিয়ে দৈনিক ছয়ঘন্টার অধিক সময়ের বেশি কাজ না করানোর বিধান রয়েছে। শ্রমআইনের বিধান লঙ্গন করে পর্যাপ্ত বেতন না দিয়ে শিশু ও কিশোর শ্রমিক দিয়ে অধিক সময়কাল কাজ করাচ্ছেন এবং এবিষয়ে রেস্টুরেন্ট মালিকের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি কোনো সদোত্তর।

সরেজমিনে দেখা যায়, ‘সালতি ক্যাফে ও রেস্টুরেন্টে’ রাত ১১টার দিকেও শিশু শ্রমিকসহ কয়েকজন কিশোর ক্রেতাদের নিকট থেকে খাবারের অর্ডার নিচ্ছেন। কেউ রান্নাঘর থেকে খাবার এনে ক্রেতাদের কাছে পরিবেশন করছেন। এক শিশু শ্রমিককে দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের খাবার শেষে ব্যবহৃত প্লেট নিয়ে যাচ্ছেন, টেবিল পরিস্কার ও প্লেট গুলো ধৌতকরন করছে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় দিনের বেলা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রেস্টুরেন্ট পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, কাঁচামাল কাটাকাটি, খাবার পরিবেশন এসকল কাজ করে থাকেন।

১০-১১ বছর বয়সী মো. এনামুল হক নামে এক শিশু মাসিক ২৫০০ টাকা বেতনে গত ৫-৬ মাস যাবত এবং সালাম (১৫) নামে আরেক কিশোর গত সাতমাস যাবত মাসিক ২৫০০ টাকায় এখানে কাজ করছেন। ইমন মিয়া (১৬) নামে আরেক কিশোর শ্রমিকও রয়েছে। এছাড়া ভূক্তভোগী ও অভিযুক্ত তারা দুজনই কিশোর।

কিশোর নিহতের ঘটনা সম্পর্কে ওই রেস্টুরেন্টের শ্রমিক শরীফ (২২) জানান, ইসমাইল ও মামুন তারা দুজনে সালাতের জন্য শশা কাটতে ছিল। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শশা নিয়ে মারামারি লাগছে। একজন আরেকজনকে চড়-থাপড় মারছে। পরে দুজনে ওয়ামরুমে গিয়ে মারামারি করে এবং একপর্যায়ে ইসমাইল অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

রেস্টুরেন্ট মালিক রাজু জানান, মারামারি খবর শুনে দৌঁড়ে গিয়ে দেখি অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছে ইসমাইল। তাড়াতাড়ি করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। শরীরে কোন আঘাতে চিহ্ন পায়নি। পোলাপানে পোলাপানে একসাথে কাজ করে একজন আরেকজনের সাথে টুকিটাকি বিষয়ে লাগালাগি থাকেই। শিশুশ্রম বিষয়ে তিনি বলেন, সব রেস্টুরেন্টে তো এই বয়সী বাচ্চাদের দিয়ে কাজ করায়। এঘটনার ‘দায় কার’ বিষয়ে বলেন, যে (অভিযুক্ত) করেছে সেই নেবে। শ্রমআইন লঙ্ঘন বিষয়ে প্রশ্ন করলে চুপ থাকেন এবং সদোত্তার দিতে পারেননি তিনি।

নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সোহেল রানা জানান, মৃতদেহে বাহ্যিক কোন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পায়নি। আজ (বুধবার) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে নিহতের দাফনের পরে পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিত পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত আল মামুন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security