বর্তমান বিশ্বে প্রাণঘাতী এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। ভাইরাসটিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘কোভিড-১৯’ হিসেবে নামকরণ করেন। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন প্রবীণরা। তাই অন্যদের চেয়ে তাদের সবচেয়ে বেশি সচেতন থাকতে হবে। চীনের তথ্যমতে, মধ্য বয়সীদের চাইতে বয়স্করা সবচেয়ে বেশি করোনার ঝুঁকিতে রয়েছে। যাদের বয়স ৫০ বছরের বেশি তাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্তত ১০ গুণ বেশি থাকে। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৮ ভাগের বয়স ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল ও ফুসফুসও সহজে সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকে। এছাড়া যাদের বিভিন্ন রোগ রয়েছে যেমন- ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ-রক্তচাপ, ফুসফুসে প্রদাহ, কিডনি জটিলতা, তাদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস প্রাণঘাতী হতে পারে। তাদের সতর্ক করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সাইফ উল্লাহ মুনসী। তিনি বলেন, ‘বয়স ৫০ হয়ে যাওয়ার পর অনেকের ডায়াবেটিস, হাইপার-টেনশন, অ্যাজমার সমস্যা দেখা দেয়। এতে ফুসফুস দুর্বল হয়ে যায়। অপরদিকে করোনাভাইরাস ফুসফুসে সংক্রমিত হয়। যার কারণে বয়স্করা এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, তারাই বেশি মারা যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘তবে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরেও অনেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো তারা কম অসুস্থ হচ্ছেন।’
এমন অবস্থায় প্রবীণদের সতর্কভাবে চলার পরামর্শ দিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগ আইইডিসিআর’এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে বারবার হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলা, মাস্ক পরা ও মুখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তার পাশাপাশি বয়স্কদের বিশেষভাবে বলা হচ্ছে তারা যেন খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হন ও অসুস্থ মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলেন। সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, বয়স্ক মানুষ যারা অন্য রোগে আক্রান্ত তাদের সবচেয়ে বেশি সর্তক সথাকতে হবে। সবাইকে আমরা যেসব পরামর্শ দিয়েছি তা মেনে চলতে হবে ও অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে জনসমাগম স্থান এড়িয়ে চলবেন। তিনি আরও বলেন, ‘বাইরে থেকে কেউ এলে কিংবা অসুস্থ কারও সাথে থেকে অন্তত এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সবচেয়ে ভালো তাদের সাথে দেখা না করলে।’