মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ওপর কর বসায়নি সরকার

যা যা মিস করেছেন

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি বলেছেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো আয়ের ওপর কোন ভ্যাট বা মূসক আরোপ করা হয়নি। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
‘প্রবাসীদের পাঠানো আয়ের ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়নি’
তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রেরিত রেমিটেন্সের ওপরে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আরোপিত হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার চালানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের এই প্রচার পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়ের ওপর মূসক বা ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে মর্মে অপপ্রচারের প্রেক্ষিতে এরকম কোন আলোচনাও বাজেট অধিবেশন বা অন্য কোথাও হয়নি।
এই সব গুজবে কান না দেয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের সম্পদ। তাদের অর্জিত আয়ের ওপর দেশের অর্থনীতির ভিত দাঁড়িয়েছে। একটি সরকারবিরোধী চক্র অপপ্রচারের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিসহ দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করছে। যারা অপপ্রচার করছে তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মন্ত্রী জানান।
গত ৭ জুন বাজেট প্রস্তাব ঘোষণার পরপরই প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ওপর সরকার করারোপ করেছে—এমন একটি প্রচারণা শুরু করে বিভিন্ন মহল। এ নিয়ে প্রবাসীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ নিয়ে মালয়েশিয়াপ্রবাসী এক বাংলাদেশি ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রবল সমালোচনা করেন। এমনকি ওই ব্যক্তি প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে অর্থ পাঠানো বন্ধ করে দেওয়ারও অনুরোধ জানান। ওই ভিডিওটি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সরকারের নজরে আসে।

গতকাল ও এক বিবৃতিতে রেমিট্যান্সের ওপর কোনো মূসক বা ভ্যাট আরোপ করা হয়নি বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশ থেকে প্রেরিত রেমিট্যান্সের ওপর মূসক বা ভ্যাট আরোপিত হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব। দেশের বৈধ রেমিট্যান্স প্রবাহ বন্ধ করে হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণের অপপ্রয়াস হিসেবে এ প্রচারণা চালানো হতে পারে বলে এনবিআর মনে করে।

বিবৃতিতে এনবিআর আরো বলেছে, মূল্য সংযোজন কর আরোপিত হয় পণ্য বা সেবা সরবরাহের ওপর। বাংলাদেশের সম্মানিত প্রবাসীরা দেশের বাইরে কঠোর শ্রমের বিনিময়ে যে সেবা দিয়ে থাকে তার বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রা আহরিত হয়। এ ধরনের কার্যক্রম মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১-এর ধারা ৩-এর উপধারা ২(ক) মোতাবেক সেবা রপ্তানি হিসেবে বিবেচিত। সুতরাং এ রপ্তানি কার্যক্রম ভ্যাটের আওতাবহির্ভূত। অর্থাৎ রেমিট্যান্স সীমা নির্বিশেষে এ খাতের ওপর কোনো ভ্যাট প্রযোজ্য নয়। তাই প্রবাসীরা বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যেকোনো পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবে।

অবৈধ চ্যানেল বা হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স পাঠালে তা জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখে না। এ কারণে হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স পাঠানো থেকে বিরত থাকতে সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআর। সংস্থাটি হুন্ডি বা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের বিষয়ে সব সময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলেও জানায়।

এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দেশে রেমিট্যান্স আসা বেড়েছে। গত মে মাসে দেশে ১৪৮ কোটি ২৮ লাখ ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা। একক মাস হিসেবে এই অঙ্ক গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা এক হাজার ৩৫৭ কোটি ৫২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে, যা এর আগের অর্থবছরের পুরো সময়ে আসা রেমিট্যান্সের তুলনায় ৬.৩ শতাংশ বেশি। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পুরো সময়ে (জুলাই-জুন) রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ১ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৫ কোটি ১১ লাখ ডলার।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security