গতকাল ও এক বিবৃতিতে রেমিট্যান্সের ওপর কোনো মূসক বা ভ্যাট আরোপ করা হয়নি বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশ থেকে প্রেরিত রেমিট্যান্সের ওপর মূসক বা ভ্যাট আরোপিত হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব। দেশের বৈধ রেমিট্যান্স প্রবাহ বন্ধ করে হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণের অপপ্রয়াস হিসেবে এ প্রচারণা চালানো হতে পারে বলে এনবিআর মনে করে।
বিবৃতিতে এনবিআর আরো বলেছে, মূল্য সংযোজন কর আরোপিত হয় পণ্য বা সেবা সরবরাহের ওপর। বাংলাদেশের সম্মানিত প্রবাসীরা দেশের বাইরে কঠোর শ্রমের বিনিময়ে যে সেবা দিয়ে থাকে তার বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রা আহরিত হয়। এ ধরনের কার্যক্রম মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১-এর ধারা ৩-এর উপধারা ২(ক) মোতাবেক সেবা রপ্তানি হিসেবে বিবেচিত। সুতরাং এ রপ্তানি কার্যক্রম ভ্যাটের আওতাবহির্ভূত। অর্থাৎ রেমিট্যান্স সীমা নির্বিশেষে এ খাতের ওপর কোনো ভ্যাট প্রযোজ্য নয়। তাই প্রবাসীরা বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যেকোনো পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবে।
অবৈধ চ্যানেল বা হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স পাঠালে তা জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখে না। এ কারণে হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স পাঠানো থেকে বিরত থাকতে সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআর। সংস্থাটি হুন্ডি বা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের বিষয়ে সব সময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলেও জানায়।
এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দেশে রেমিট্যান্স আসা বেড়েছে। গত মে মাসে দেশে ১৪৮ কোটি ২৮ লাখ ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা। একক মাস হিসেবে এই অঙ্ক গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা এক হাজার ৩৫৭ কোটি ৫২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে, যা এর আগের অর্থবছরের পুরো সময়ে আসা রেমিট্যান্সের তুলনায় ৬.৩ শতাংশ বেশি। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পুরো সময়ে (জুলাই-জুন) রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ১ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৫ কোটি ১১ লাখ ডলার।