খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদনে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি ফের পিছিয়ে গেছে। ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার এই শুনানির জন্য ৫ জানুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন।
বকশিবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে বিশেষ জজ আদালতের এই অস্থায়ী এজলাসে খালেদার বিরুদ্ধে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলারও বিচার চলছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা ১০টা ৩৫ মিনিটে তার গুলশানের বাসা থেকে রওনা হয়ে কোকোর বড় মেয়ে জাফিয়া রহমানকে নিয়ে ১১ টা ৩৫ মিনিটে আদালতে পৌঁছান। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেন খালেদা।
জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের তিন কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের এ মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে সুবিচার চান তিনি। এরপর মামলার কার্যক্রম স্থগিতের জন্য হাই কোর্টে আবেদন করেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
শপথ আইন ‘না মানার’ কারণ দেখিয়ে ৩২ জনের সাক্ষ্য নতুন করে নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয় ওই আবেদনে।
১৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার পক্ষে সাফাই সাক্ষী দেওয়ার জন্য ২২৫ জনের তালিকা আদালতের কাছে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু খালেদা উপস্থিত না হওয়ায় তার অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি পিছিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার খালেদা আদালতে উপস্থিত হলে তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন হাই কোর্টে করা ওই আবেদনের কথা তুলে ধরে সময়ের আবেদন করেন।
তিনি বলেন, এ মামলার বাদী সাক্ষ্য দেওয়ার শপথ নেওয়ার সময় সৃষ্টিকর্তার নাম নেননি, যার ফলে শপথ আইন ভঙ্গ হয়েছে।
অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এর বিরোধিতা করে বলেন, এদিন আত্মপক্ষ সমর্থন করার কথা। অন্য কোনো বক্তব্য আসামিপক্ষ দিতে পারে না।
তাছাড়া আসামিপক্ষের আবেদনে হাই কোর্ট যেহেতু স্থগিতাদেশ দেয়নি, সেহেতু মামলা চলতে কোনো বাধা নেই বলে যুক্তি দেন কাজল।
ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, এ জে মোহাম্মদ আলী ও আব্দুর রেজাক খানও ছিলেন খালেদার আইনজীবী দলে।
শুনানি শেষে বিচারক খালেদার সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের বাকি বক্তব্য শোনার জন্য ৫ জানুয়ারি নতুন দিন ঠিক করে দেন।
অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।
তারেক রহমান দেশের বাইরে আছেন। কাজী সালিমুল হক কামাল, শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।