বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি উদ্যানের বন্য প্রাণী পানি সঙ্কটে

যা যা মিস করেছেন

অব্যাহত বন উজাড়, বৃক্ষনিধন, অপরিকল্পিত গভীর নলকূপ, সেচের যত্রতত্র শ্যালো দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন ও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে শুষ্ক মৌসুমে বন্যপ্রাণির খাবার পানি সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া ও হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকসহ বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণি। ক্রমাম্বয়ে বনের প্রাকৃতিক গাছগাছালি বিলীন হওয়ায় পাহাড়ি ছড়া, নালা ও খাল শুকিয়ে যাচ্ছে। তৃষ্ণা মেটাতে লোকালয়ে ছুটাছুটি করতে গিয়ে বন্যপ্রাণি ট্রেন ও যানবাহনের নিচে কাঁটা পড়ে মারা যাচ্ছে।
পরিবেশ কর্মী ও স্থানীয়দের মতে, গত কয়েক দশকে লাউয়াছড়া বনের গভীরতা অনেক হ্রাস পেয়েছে। দু’দশক আগেও শুষ্ক মৌসুমে ছড়া, খাল ও জলাধারে পানি দেখা যেতো। একইভাবে সাতছড়ি উদ্যানেও। তবে বনের ঘনত্ব কমে যাওয়ায় এখন শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ি ছড়া ও নালা শুকিয়ে বন্যপ্রাণীর খাবার পানি সঙ্কট তীব্র হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও খাবার যোগান না থাকার কারণে প্রাণিগুলো লোকালয়ে বেরিয়ে নানা সময়ে মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে। বন্যপ্রাণী সাধারণত: উন্মুক্ত স্থানে পানি পান করে না। এরা বন-জঙ্গলের গর্ত ও নালার পাশের পানি খেয়ে থাকে।
দীর্ঘ অনাবৃষ্টিতে ছড়া, খালে পানি শুকিয়ে বনে পানির জলীয় অংশ কমতে শুরু করেছে। ফলে শুকনো মৌসুমে খাল, ছড়া শুকিয়ে যাওয়ায় বন্যপ্রাণীর খাবার পানি সংকট দেখা দিচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে বনের মূল্যবান গাছ কেটে ফেলায় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপড়ে পড়ায় ক্রমাম্বয়ে ফাঁকা হচ্ছে বন। ফলে একদিকে প্রাণির আবাসস্থল বিলুপ্ত হচ্ছে অন্যদিকে খাবার আর শুকনো মৌসুমে পানির সংকটে ভুগছে প্রাণিসমুহ। লাউয়াছড়া বনের মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি প্রধান জিডিসন প্রধান সুচিয়ান বলেন, আজ থেকে পনের, বিশ বছর আগেও শুকনো মৌসুমে এখানকার ছড়া ও খালে পানি থাকত। এখন পানি শুকিয়ে যায়। তবে ছড়ার কিছু কিছু স্থানে ড্রেজিং করে পানি রাখার জন্যও ইতিপূর্বে সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রস্তাবও করা হয়েছে।
লাউয়াছড়া বনরেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বন্যপ্রাণীর খাবার পানি সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ছড়া শুকিয়ে গেলে বন্যপ্রাণির খাবার পানির কিছুটা সংকট দেখা দেয়। বনের ডরমিটরী এলাকায় একটি জলাধার আছে। অন্য জলাধারে পানি থাকে না।
বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এখনো ছড়াগুলোর কিছু কিছু স্থানে পানি রয়েছে। লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি উদ্যানে পানির জন্য জলাধার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। দু’টি উদ্যানে জলাধার তৈরির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি ও গাছ কমে গেছে আর জনসংখ্যা বেড়ে গেছে। যে কারণে শুষ্ক মৌসুমে উদ্যানের ভেতর পানির কিছুটা সংকট থাকে। তবে পানি না পেলেও গাছের পাতা চিবিয়ে নেয় প্রাণি।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security