বহুল কাঙিক্ষত পদ্মা সেতুর ৪১তম, অর্থাৎ শেষ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে যুক্ত হলো প্রমত্ত পদ্মার এপার-ওপার। বৃহস্পতিবার দেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামোর মূল অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। তবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বেশ কিছু কাজ এখনও বাকি, যা শেষ হতে লাগবে প্রায় আরও এক বছর।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর ২৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১২৮৫টি এবং ২৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১৯৩০টি স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার-টি গার্ডারের মধ্যে ৩১০টি স্থাপন করা হয়েছে। বাকি রোডওয়ে স্ল্যাব, রেলওয়ে স্ল্যাব ও সুপার-টি গার্ডার বসাতে প্রায় আট মাস সময় লাগবে। এরপরে স্ল্যাবের ওপর হবে পিচ ঢালাইয়ের কাজ। এছাড়া ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজও বাকি। তিনি আরও জানান, ভাঙনের কারণে পদ্মা সেতুর ১২৬টি রোডওয়ে স্ল্যাব ও ১৯২টি রেলওয়ে স্ল্যাব নদীতে তলিয়ে যায়। সেগুলো নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। রেলওয়ে গার্ডার লুক্সেমবার্গ থেকে আনা হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ সেগুলো কনস্ট্রাকশন সাইটে চলে আসার কথা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯১ ভাগ। এছাড়া সেতুর নদী শাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৭৫ দশমিক ৫০ ভাগ। সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (নদী শাসন) শরফুল ইসলাম সরকার জানান, সেতুর দক্ষিণপ্রান্তে মোট ১২ কিলোমিটার নদী শাসন কাজ হবে। এর মধ্যে ৮ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী এলাকায় তিন কিলোমিটার নদী শাসন কাজ বাকি আছে এবং উজানে আরও এক কিলোমিটার কাজ চলমান আছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য আগামী বর্ষার আগে নদী শাসনের প্রধান কাজ, যেমন- ড্রেজিং, বালুর বস্তা ফেলা, সিসি ব্লক ফেলা ইত্যাদি কাজ শেষ করা।
রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজও চলছে। রেললাইনের দুই হাজার ৯৫৯টি স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ৯৪২টি এর মধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে। অর্থাৎ সেতুতে প্রায় তিন কিলোমিটার চার লেনের সড়ক ও চার কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ। তবে সব স্ল্যাব বসানো হলেই রেল চালু করা যাবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট করে বলছেন না কেউ।