রবিবার, মে ৫, ২০২৪

সংসদ লেকে ভাসানো নৌকা দু’টিতে ব্যয় ৪০ লাখ

যা যা মিস করেছেন

গ্রামবাংলার অপরুপ সৌন্দর্য্যরে সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা হয়েছিলো দৃষ্টিনন্দন জাতীয় সংসদ ভবন। মার্কিন স্থপতি লুই আইকানের অনন্য সৃষ্টি ওই ভবনের চারপাশে মনোরম লেক। সংসদের বিশেষ অধিবেশনকে সামনে রেখে পানি থৈ থৈ সেই লেকেই ভাসানো হয়েছে গ্রামের চিরচেনা ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ নৌকা। ওই নৌকা দু’টি তৈরিতে ৪০ লাখ টাকা ব্যয় করেছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ-২০২০) উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবন লেকে মুজিববর্ষের লোগো খচিত নৌকা ভাসানো কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। সংসদ সচিব জাফর আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, জাতীয় সংসদের হুইপ মো. ইকবালুর রহিম ও সামশুক হক চৌধুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবং সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান ও সৈয়দা রুবিনা আক্তার।

অনুষ্ঠানে চিফ হুইপ নূর-এ আলম চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নৌকাকে প্রতীক হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন কারণ ঐ সময় দেশের জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ জীবিকা অর্জনে নৌকার উপর নির্ভরশীল ছিলেন। নৌকা ও জয় বাংলা বাঙালির জন্য একটি শক্তি। নৌকার মধ্যেই স্বাধীনতা ও স্বাধীকারের অনুপ্রেরণা জড়িয়ে আছে। সংসদ লেকে নৌকা ভাসানোর মাধ্যমে সংসদের সৌন্দর্য্য আরো বাড়লো। যা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সংসদ ভবন পরিদর্শনে আকৃষ্ট করবে।

প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের মাধ্যমে বিজয় নিশ্চিত হয়। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নেতৃত্বে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগ বিজয়ী হয়েছে। নৌকা প্রতীকের মাধ্যমে দেশের আবহমান ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নদী আর নৌকা ছাড়া দেশের ছবি কল্পনা করা যায় না। তাই জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে নৌকাকে বেছে নিয়েছিলেন। ১৯৭০ সালের যে নির্বাচন বাঙালিকে স্বাধীনতার একদফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, সে নির্বাচনে নৌকা প্রতীকেই পড়েছিল সবচেয়ে বেশি ভোট। এসব দিক বিবেচনা করেই মুজিববর্ষে নৌকা তৈরি ও সংসদ ভবনের লেকে ভাসানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নৌকা দু’টি আসলেই বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। কারুকীর্তি দেখে চোখ জুড়িয়ে যাবে যে কারও। অনেকদিন ধরে এই নৌকা তৈরি ও সাজানোর কাজ চলে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নকশা অনুমোদনের পর নৌকার মূল কাঠামো গড়া হয়েছে গয়না নৌকার আদলে। লম্বায় ২৭ ফুট। পাঁচ ফুট চওড়া। নৌকা দুটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৪০ লাখ টাকা। পুরো কাজের তত্ত্বাবধানে ছিলেন শিল্পী আনিসুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক নৌকার প্রাথমিক ডিজাইন করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সংসদ লেকে ভাসানো নৌকা দুটির ছৈ বা ছাউনিকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় করা হয়েছে। ছাউনি হলেও, একে অনেকটা ক্যানভাসের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছেন শিল্পীরা। সেখানে আবহমান বাংলার নানা ছবি এঁকেছেন। চমৎকার ফোক ফর্ম ব্যবহার করা হয়েছে। আলাদা আলাদা বর্গাকার ফ্রেমে দৃশ্যমান করেছেন বাঙালির ঐতিহ্যবাহী শখের হাঁড়ি, কাঠের চাকাওয়ালা ঘোড়া, কাগুজে বাঘ, কুঁড়ে ঘর, দোয়েল শাপলা- আরও কত কী! ছৈয়ের শেষ সীমানায় ব্যবহার করা হয়েছে জামদানির ফর্ম। নৌকার পাটাতন ও বৈঠাতেও কারুকাজ করা হয়েছে। যা দেখলে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র : কালের কণ্ঠ।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security