বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

ইডেনের সাবেক অধ্যক্ষ হত্যা: দুই গৃহকর্মীর মৃত্যুদণ্ড

যা যা মিস করেছেন

ইডেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই গৃহকর্মীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন গৃহকর্মী রীতা আক্তার ওরফে স্বপ্না ও রুমা ওরফে রেশমা।

এর আগে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শুনানি শেষে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান রায় ঘোষণা এ তারিখ নির্ধারণ করেন। মামলাটিতে মোট ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।

২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাজধানী এলিফেন্ট রোডের নিজ বাসায় খুন হন মাহফুজা চৌধুরী। পরের দিন ১১ ফেব্রুয়ারী এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ইসমত কাদির গামা নিউ মার্কেট থানায় মামলা দায়ের করেন। গৃহকর্মী রিতা আক্তার ওরফে স্বপনা ও রুমা ওরফে রেশমা এবং দুই গৃহকর্মীর যোগানদাতা রুনু বেগমকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেয় পুলিশ। স্বপনা এবং রেশমা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। ২০১৯ সালের ২১ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউ মার্কেট থানার এসআই আলমগীর হোসেন মজুমদার দুই গৃহকর্মীকে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। রুনু বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়।

অভিযোগ পত্রে বলা হয়,  মাহফুজা চৌধুরী ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি স্বামীর সঙ্গে ধানমন্ডির সুকন্যা টাওয়ারের ডুপ্লেক্স বাসায় থাকতেন। ডুপ্লেক্স বাসার ১৫/সি নম্বর ফ্ল্যাটে রান্না হতো এবং গৃহকর্মীরা থাকত। গত বছরের ১১ জানুয়ারি রাশিদা বেগম ওই বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে যোগ দেয়। এর আগে ৪ জানুয়ারি ওই বাসায় কাজে যোগ দেয় রুমা ওরফে রেশমা। রিতা আক্তার ওরফে স্বপ্না প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে ২ ফেব্রুয়ারি গৃহকর্মী হিসেবে যোগ দেয়। ৯ ফেব্রুয়ারি মাহফুজা চৌধুরীর স্বামী ইসমত কাদির গামা ব্যবসার কাজে বাসার বাইরে যান। এ সময় মাহফুজা চৌধুরীকে হত্যা করে টাকা চুরির পরিকল্পনা করে রুমা ও রিতা। তারপর ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় ইসমত কাদির গামা প্রতিদিনের মতো ব্যবসার কাজে বাসার বাইরে যান।

দুপুরে রান্না শেষে ১৬/সি ফ্ল্যাটে মাহফুজা চৌধুরীকে খাবার দেয় রুমা। খাওয়া শেষে মাহফুজা চৌধুরী তার কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রুমা, রিতা, রাশিদা বেগম গোসল শেষে খাওয়া-দাওয়া করে। রাশিদা পানি গরম করার জন্য চুলায় পাতিল বসিয়ে দেয়। তখন রুমা ও রিতা রাশিদাকে বলে, তুমি ঘুমাও। রাশিদা গৃহকর্মীদের কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সেই সুযোগে রুমা ১৬/ সি ফ্ল্যাটের মূল ফটকের লক ও ছিটকিনি ভেতর থেকে লাগিয়ে দেয়। রুমা ও রিতা বিকেল ৪টার দিকে মাহফুজা চৌধুরীর রুমে যায়। রিতা মাহফুজা চৌধুরীর হাত-পা চেপে ধরে। রুমা মাহফুজা চৌধুরীর গলায় থাকা ওড়না দিয়ে নাক-মুখ পেঁচিয়ে বালিশচাপা দেয়। মাহফুজা চৌধুরী বাঁচার জন‌্য প্রতিরোধ করতে চাইলে তার কোমর থেকে পা পর্যন্ত খাটের নিচে ঝুলে পড়ে। ঠোঁটে আঘাত লেগে রক্ত বের হয়। ৫-৭ মিনিট পর তার নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে আসামিরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করে।

মাহফুজা চৌধুরীর বালিশের নিচ থেকে চাবি নিয়ে আলমারি খোলে রুমা। তারা টাকা, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মালামাল চুরি করে কয়েকটি জুয়েলারির পার্স ও ব্যাগ মাহফুজা চৌধুরীর শয়নকক্ষ ও মেঝেতে ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় ফেলে রেখে বোরকা পড়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। বাসার নিরাপত্তাকর্মী জিজ্ঞেস করলে, রুমা ও রিতা জানায়, তারা ১৬/সি ফ্ল্যাটে আর্মির (মাহফুজা চৌধুরীর ছেলে) বাসায় কাজ করে। টেইলার্সে যাওয়ার কথা বলে তারা বের হয়ে যায়।

তারপর প্রিয়াঙ্গন মার্কেটের সামনে থেকে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে গাবতলীতে যায় রুমা ও রিতা। রিতা বাসযোগে তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার মদন থানাধীন ফতেহপুর গ্রামে এবং রুমা রাজধানীর কাফরুলের পূর্ব বাইটেকিতে মায়ের ভাড়া বাসায় চলে যায়।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security