বুধবার, মে ১, ২০২৪

স্বাস্থ্য-শিক্ষা ডিজির ড্রাইভারের শতকোটি টাকা

যা যা মিস করেছেন

অবৈধ অস্ত্র ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক ডিজি আবুল কালাম আজাদের গাড়িচালক আব্দুল মালেক ওরফে মালেক ড্রাইভারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় তার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা ও একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে র‌্যাব।

তিনি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এ কে এম এনায়েত হোসেনের গাড়ি চালাতেন। র‌্যাব জানিয়েছে, মালেক ড্রাইভার নামে পরিচিত এই ব্যক্তির শতকোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি, চাঁদাবাজি, জাল টাকার কারবারসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। তাঁর কাছ থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকার জাল নোট এবং একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রবিবার রাজধানীর তুরাগের কামারপাড়ার ৪২ নম্বর বামনের টেক হাজী কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলার বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সূত্র জানায়, মালেকের স্ত্রীর নামে দক্ষিণ কামারপাড়ায় ২টি সাততলা বিলাসবহুল ভবন আছে। ধানমন্ডির হাতিরপুল এলাকায় ৪.৫ কাঠা জমিতে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন আছে এবং দক্ষিণ কামারপাড়ায় ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্ম আছে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত আছে বলেও জানা গেছে। এভাবে শত কোটি টাকার মালিক বলে গেছেন তিনি।

র‌্যাব জানায়, ড্রাইভার মালেকের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা, জাল টাকার ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। সে তার এলাকায় সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শক্তির মহড়া ও দাপট প্রদর্শনের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে এবং জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল।

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলের একজন গাড়িচালক এবং একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাস। তিনি ১৯৮২ সালে সর্বপ্রথম সাভার স্বাস্থ্য প্রকল্পে গাড়িচালক হিসেবে যোগদান করেন। পরে ১৯৮৬ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলে চাকরি শুরু করেন। বর্তমানে তিনি প্রেষণে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিদপ্তরে কর্মরত।

র‌্যাবের তদন্তকারীরা জানান, মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠন তৈরি করে নিজে সেই সংগঠনের সভাপতি হয়েছেন। এই পদের ক্ষমতাবলে চালক নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির নামে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করতেন। তিনি গাড়িচালক হলেও মহাপরিচালকের জন্য বরাদ্দকৃত একটা সাদা পাজেরো জিপ গাড়ি (নং ঢাকা মেট্রো গ-১৩-২৯৭৯) ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে থাকেন। অধিদপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং গাড়িচালকদের সংগঠনের সভাপতি হওয়ায় ব্যাপক ক্ষমতা দেখাতেন তিনি। মহাপরিচালকের জন্য বরাদ্দকৃত পাজেরো গাড়ি ছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরো দুটি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন। এর মধ্যে একটি পিকআপ গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঠ-১৩-৭০০১) তিনি নিজের গরুর খামারের দুধ বিক্রি এবং মেয়ের জামাইয়ের পরিচালিত ক্যান্টিনের মালামাল পরিবহনের কাজে ব্যবহার করতেন। অন্য একটি মাইক্রোবাস (নং ঢাকা মেট্রো চ- ৫৩-৬৭৪১) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মরত তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা ব্যবহার করতেন।

জানা গেছে, ড্রাইভার মালেক তার মেয়ে নৌরিন সুলতানা বেলিকে অফিস সহকারী পদে, ভাই আব্দুল খালেককে অফিস সহায়ক পদে, ভাতিজা আব্দুল হাকিমকে অফিস সহায়ক পদে, বড় মেয়ে বেবির স্বামী রতনকে ক্যান্টিন ম্যানেজার হিসেবে, ভাগ্নে সোহেল শিকারীকে ড্রাইভার পদে, ভায়রা মাহবুবকে ড্রাইভার পদে, নিকট আত্মীয় কামাল পাশাকে অফিস সহায়ক পদে স্বাস্থ্য অধিদফতরের চাকরি দিয়েছেন।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security