বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান চিকিৎসক ডা. রুহুল আবিদ এবং তার অলাভজনক সংস্থা হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন ফর অল (হ্যাফা) যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউমাস) প্রস্তাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি আল্পার্ট মেডিকেল স্কুলের একজন অধ্যাপক।ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউমাস) নৃ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক জিন-ফিলিপ বেলিউয়ের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশি এই বিজ্ঞানী ও তাঁর সংস্থা নোবেল পুরস্কারে মনোনীত হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অভিনন্দন জানাচ্ছেন নেটিজেনরা।
ডা. আবিদ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে স্নাতক ও জাপানের নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোলিকুলার বায়োলজি ও জৈব রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০১ সালে তিনি হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল থেকে ফেলোশিপ শেষ করেন। তিনি ব্রাউন গ্লোবাল হেলথ ইনিশিয়েটিভের একজন নির্বাহী সদস্যও।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর ডা. আবিদ সারা দেশে তৈরি পোশাকশ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার তাগিদ থেকে ‘হায়েফা’ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৬ সালে হায়েফা নিয়ে আসে ডিজিটাল উদ্ভাবন ‘নিরোগ’। এটি একটি সৌরবিদ্যুত্ পরিচালিত, অফলাইনে ব্যবহার করা যায় এমন মোবাইল ইলেকট্রনিক মেডিক্যাল রেকর্ড (ইএমআর) সিস্টেম। ‘নিরোগ’-এর মাধ্যমে ডা. আবিদ ও তার দল দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন এমন মানুষের চিকিৎসক রেকর্ড, রোগ বিশ্লেষণ ও সেই অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেন।
তার সংস্থা হায়েফা বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিতদের বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। গত তিন বছরে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৩০ হাজার পোশাকশ্রমিককে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে। এছাড়াও সংস্থাটি প্রায় ৯ হাজার সুবিধাবঞ্চিত নারী ও পোশাকশ্রমিকের জরায়ু ক্যানসার স্ক্রিনিং ও চিকিত্সাসেবা এবং কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষকে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছে। বর্তমানে সংস্থাটি দুটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় দক্ষতা তৈরির প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
২০২০ সালের এপ্রিলে ব্রাউন ইউনিভার্সিটি এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা প্রজেক্ট হোপের সঙ্গে একটি সহযোগিতামূলক কার্যক্রম শুরু করে হায়েফা। ডা. আবিদ এবং তার সংস্থা জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য ২০১৮ সালে গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জস কানাডার ‘স্টারস ইন গ্লোবাল হেলথ’ পুরস্কার পায়। ডা. আবিদ তার প্রতিষ্ঠান থেকে কাজের জন্য কোনো বেতন বা পারিতোষিক নেন না। ২০২০ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত ২১১ ব্যক্তির মধ্যে ডা. আবিদ একজন। আগামী অক্টোবরে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।