ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫১ জনকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে প্যারোলহীন আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার এই রায় দেওয়া হয়। এর আগে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ট্যারান্ট দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫১ জনকে হত্যার দায় স্বীকার করে নিয়েছেন। এছাড়া আরো ৪০ জনকে হত্যার চেষ্টা এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার দায়ে তার বিরুদ্ধে আরো দুটি মামলা করা হয়েছিলো। সবগুলো মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ট্যারান্ট।রায়ের সময় বিচারক ট্যারান্টের হামলাকে ‘অমানবিক’ বলে আখ্যায়িত করেন।
এই প্রথমবারের মত নিউজিল্যান্ডে প্যারোল ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দেয়া হলো। হামলাকারী ব্রেন্টন টারান্টকে আমৃত্যু কারাগারে থাকতে হবে।
নিউজিল্যান্ডের বিচার ব্যবস্থায় মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ২৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান, যার বিরুদ্ধে ৫১ জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, আরো ৪০ জনকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
দণ্ডাদেশ দেয়ার সময় বিচারক মন্তব্য করেন যে, ব্রেন্টন টারান্ট পরিকল্পিতভাবে দু’টি মসজিদে হামলা করেন এবং তিনি তার কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত নন।
গত বছরের ১৫ই মার্চ ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদে বন্দুক নিয়ে গুলি করতে শুরু করে ওই হামলাকারী। গুলি করার দৃশ্য সে সরাসরি অনলাইনে সম্প্রচার করে।
কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে আদালত কক্ষ প্রায় খালিই ছিল। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভিডিও ফিডের মাধ্যমে শহরের অন্যান্য আদালত কক্ষে হাজার হাজার মানুষ আদালতের কার্যক্রম দেখানো হয়েছে।
ধুসর রঙের পোশাক এবং তিনজন পুলিশ কর্মকর্তার বেষ্টনীতে ব্রেন্টন টারান্ট পুরো সময় চুপচাপ ছিলেন বলে জানা যায়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বার্নাবি হাওয়েজ আদালতকে বলেছেন, ওই হামলার জন্য বন্দুকধারী বহু বছর ধরে পরিকল্পনা করছিল। তার উদ্দেশ্যে ছিল ”যত বেশি সম্ভব মানুষকে হতাহত করা।”
গত বছর নিউজিল্যান্ডের দুটি মসজিদে হামলা করে ৫১ জনকে হত্যা করে ব্রেন্টন টারান্ট।
হামলা থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা। নিউজিল্যান্ডে সফররত ক্রিকেট দলের বেশ কজন সদস্য ওইদিন হামলার শিকার হওয়া একটি মসজিদে জুমার নামা পড়তে গিয়েছিলেন।