ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে সারাদিনে অন্তত ৫-৬ বার বা সব মিলিয়ে অন্তত ১-২ ঘণ্টা আমরা ফেসবুক ঘাঁটাঘাটিতেই সময় কাটাই। কোথাও বেড়াতে গেলেন বা কোনও রেস্তোরাঁয় খেতে গেলেন, সেলফি তুলে সে ছবি ফেসবুক-এ পোস্ট না করা পর্যন্ত শান্তি নেই! ফেসবুকে নিজেদের ‘রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস’-এ কিছু না লেখার মানে আপনি আপনার সম্পর্ক লোকের কাছে গোপন করতে চাইছেন…এমনটাই ধরে নেওয়া হয়।
নিজের ভাল লাগা, দুঃখ, কষ্ট, প্রেম, ভয়, বিশ্বাস–সব কিছুই যেন ফেসবুক পেজে পোস্ট করতেই হবে! সব মিলিয়ে ফেসবুক বর্তমানে আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে।
কিন্তু জানেন কি, ‘জার্নাল অব সোশ্যাল সাইকোলজি’-তে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট বলছে, অন্তত পাঁচ দিন ফেসবুক থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারলে আখেরে লাভই হবে! কমবে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ।
সম্প্রতি কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এরিক ভ্যানম্যানের নেতৃত্বে একটি দল মোট ১৩৮ জন ফেসবুক ব্যবহারকারীকে নিয়ে গবেষণা চালান।
এই গবেষণায় তাঁরা দেখেছেন, এই ১৩৮ জনের প্রত্যেকেই দিনে অন্তত আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা ফেসবুকে সময় কাটান। প্রথমে ওই ১৩৮ জনকে গবেষণাগারে আনা হয়। প্রত্যেকেকে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এঁদের প্রত্যেকের মুখ থেকে লালার নমুনা নেওয়া হয়।
এঁরা প্রত্যেকেই জানিয়েছিলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুদের ছবি দেখে বা নিজের ছবি পোস্ট করে তাঁরা বেশ স্ফুর্তিতেই থাকেন। কিন্তু এরিকের দাবি, পাঁচ দিন পরে সেই ছবিটা পাল্টে গিয়েছে। প্রথমে অনেকেই ফেসবুক বন্ধ রাখতে রাজি হচ্ছিলেন না।
কিন্তু পাঁচ দিন ফেসবুক থেকে দূরে থাকার পর দেখা গেল, প্রত্যেকের দেহে করটিসলের মাত্রা কমে গিয়েছে। এই করটিসল হল মানবদেহের এমন একটি হরমোন যা চাপ-উদ্বেগের মতো বিষয়গুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম। এই গবেষণার শেষে এরিক ভ্যানম্যান ও তাঁর দল এই সিদ্ধান্তে আসেন, ফেসবুক বন্ধ রাখলে মানুষের মানসিক চাপ কমতে বাধ্য।