সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ওয়েবসাইট হ্যাকারের কবলে পড়েছে।তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক দাবি করেছেন,‘বিদেশ থেকে পরিকল্পিতভাবে’ মঙ্গলবার রাতে এই সাইবার হামলা চালানো হয়।
ফেইসবুকে আসা বিভিন্ন পোস্ট থেকে জানা যায়, রাত সাড়ে ১০টার পরে কোনো এক সময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের ওয়েবসাইটের হোম পেইজ বদলে দেয় হ্যাকাররা। সেখানে বসিয়ে দেয় কোটা সংস্কার আন্দোলনের বার্তা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত থেকেই সরকারের সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো সাইটগুলো উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে। কিছু কিছু সাইট এরই মধ্যে লাইভ (সচল) করা গেছে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে সাইট হ্যাক করে হ্যাকাররা ‘হ্যাকড বাই বাংলাদেশ’ বার্তা ঝুলিয়ে দিয়েছিল।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার মঙ্গলবার রাতে বলেন, ‘আমরা দু’টি বিষয় ধারণা করছি। একটি হলো যারা কোটা সংস্কারের পক্ষে আন্দোলন করছে তারা হ্যাক করে থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, এটা শুধু বাংলাদেশের আক্রমণ নয়, এই আক্রমণ সারাবিশ্বে হয়েছে। সিসকোতে একটা ত্রুটির কারণে এটা হয়েছে। দু’দিন আগে থেকেই বিশ্বে এই সমস্যা শুরু হয়েছে। আমাদের যাদের সতর্ক থাকার প্রয়োজন ছিল, তারা সচেতন ছিলেন না। ফলে এটা ঘটে থাকতে পারে। এই সময় ও সুযোগটাকে কাজে লাগানো হয়েছে।’
তিরি আরও বলেন, ‘আমরা কোনও বিষয়কেই উড়িয়ে দিচ্ছি না। আমাদের প্রথম কাজ হলো সাইট ফিরেয়ে আনা। সেই কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে।’
হ্যাক হওয়া সাইটের মধ্যে ছিল, বঙ্গভবন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, পার্ব্যত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রিয়া মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়, অ্যাটর্নি জেনারেল, কন্ট্রোলার জেনারেল, আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা ইনস্টিটিউট, বিসিএস প্রশাসনের ওয়েব সাইটসহ আরও কয়েকটি।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতরসহ সরকারের সব মিলিয়ে ওয়েব সাইটের সংখ্যা ২৫ হাজার। ওয়েবসাইটগুলো একটি প্ল্যাটফর্মে রাখা আছে। সাইটগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে তৈরি।