রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার জানান, সোমবার ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- রাজু আহমেদ, ফয়সালুর রহমান আকাশ, মোহাম্মদ জোহায়ের আয়াজ, মহিউদ্দিন ইমন, স্বাধীন আল মাহমুদ ও কাজী রাশেদুল ইসলাম রনি।
গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, সিপিইউ এবং মোবাইল সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন করে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল বাতেন জানান।
পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি প্রমাণিত হলে গণিত পরীক্ষা বাতিলের বিষয়ে ভেবে দেখা হবে বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
গ্রেপ্তারদের প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রটি ফেইসবুক পেইজ খুলে একটা ক্লায়েন্ট গ্রুপ তৈরি করে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন পরীক্ষার আগের দিন তারা বিভিন্ন অংকের টাকার বিনিময়ে ইন্টারনেটে নির্দিষ্ট গ্রাহকদের কাছে প্রশ্ন ছড়াতো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, বোর্ডের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এ বছর অংক পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে অনেক লেখালেখি ও আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
“এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সুতরাং তদন্তে বেরিয়ে আসবে যে কারা এটার জন্য দায়ী। নরমালি আমাদের যে সিস্টেম রয়েছে, তাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সুযোগ নেই,” বলেন মাহবুব।
গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা বাতেন, “তদন্তে আমরা ছয়টি ধাপ অতিক্রম করেছি। আর দুটি ধাপ বাকি রয়েছে। এ দুটি অতিক্রম করলে প্রশ্ন ফাঁসের অন্তরালে কারা তা নিশ্চত হওয়া যাবে।”
গ্রেপ্তাররা আগে কখনও এসব কাজে জড়িত ছিল না, তারা নতুন করে যুক্ত হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
আর শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ পরীক্ষার আগের রাতে ফাঁস হওয়া গণিতের প্রশ্নের সঙ্গে মূল প্রশ্ন মেলেনি বলে দাবি করলেও পরীক্ষা শুরুর ৪০ মিনিট আগে প্রশ্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে চলে আসে বলে স্বীকার করেন। আর এজন্য তিনি দায়ী করেন শিক্ষকদের।
এরপর মন্ত্রী বলেন, “যদি দেখা যায় যে আগেই (গণিতের) প্রশ্ন আউট হয়ে গিয়েছিল এবং তার ফলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অথবা কেউ লাভবান হয়েছে, তাহলে নিশ্চয়ই আমরা গণিতের পরীক্ষা বাতিলের বিষয়ে ভাবব।”