প্রথম স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলায় প্রবাস ফেরত স্বামী শফিকুল ইসলাম হাওলাদারকে দ্বিতীয় বিয়ের আসর থেকে গ্রেপ্তার করেছে রায়পুর থানার পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের পৌর সভার দেনায়েতপুর গ্রামের পোস্ট অফিস সংলগ্ন খোরশেদ আলমের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শফিকুল ইসলাম রায়পুর ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের চালতাতলী এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীন হাওলাদারের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক।
সৌদি প্রবাসি শফিকুল ইসলাম হাওলাদার প্রায় ১৮ বছর আগে পৌরসভার মধূপুর গ্রামের আলী হায়দার ভুইয়ার মেয়ে নাজমা আক্তারকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে নবম শ্রেণির একটি মেয়ে ও ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই প্রথম স্ত্রীকে ৩ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য প্রায়ই নির্যাতন করত। যৌতুকের চাহিদা মেটাতে না পেরে ও নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে তিন বছর ধরে আগে প্রথম স্ত্রী তার সন্তানদের নিয়ে তার পিতার বাড়ি আশ্রয় নেয়।
শফিকুল ও বিদেশে পাড়ি দিয়ে স্ত্রী সন্তানদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। গত একমাস আগে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে ঢাকায় তার স্বজনদের বাসায় থেকে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজতে থাকে।
এক পর্যায়ে দেনায়েতপুর গ্রামের খোরশেদ আলমের মেয়ের সাথে দ্বিতীয় বিয়েতে আবদ্ধ হন। স্বামীর এ ধরণের কার্যকলাপের কারণে নাজমা লক্ষ্মীপুর জেলা আদালতে শফিকুল ও তার মা আমেনা বেগমকে আসামি করে যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে শফিকুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
পরে আদালতের আদেশ নিয়ে নাজমা থানা পুলিশের সাহায্য চাইলে রায়পুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বিয়ের আসর থেকে শফিকুলকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে নাজমা বেগম বলেন,‘সে আমায় অনেক কষ্ট দিয়েছে। আমার দু’সন্তানের মধ্যে মেয়েটি আজ বিবাহ উপযুক্ত। আমি ছেলে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিকৃত রুচীর স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। আমি উপযুক্ত বিচার চাই।’
থানা হেফাজতে আটক শফিকুল বলেন, ‘প্রথম স্ত্রী ব্যভিচারী। আমার সন্তানদের সে দূরে রেখে আনন্দে মত্ত ছিল। আমি এমন স্ত্রীর সংসার করতে চাই না। তাই দ্বিতীয় বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি। কয়েকদিন আগে তাকে তালাক নামা পাঠিয়েছি। প্রথম স্ত্রী নাজমা বেগম তা গ্রহণ করেনি।’