সোমবার, এপ্রিল ২২, ২০২৪

বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতলে অঘটন হবে না!

যা যা মিস করেছেন

আয়ারল্যান্ড সফর শেষে দুই দিনের ঝটিকা সফরে দেশে এসেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। কাল উড়াল দিয়েছেন আবার। দুবাই থেকে তামিম ইকবালকে সঙ্গে নিয়ে এবার যাত্রা ইংল্যান্ডের উদ্দেশে। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে পরশু রাতে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ অধিনায়ক কথা বলেছেন বিশ্বকাপে তাঁর ও তাঁর দলের লক্ষ্য নিয়ে।

প্রশ্ন: আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতার পর দলের আত্মবিশ্বাস নিশ্চয়ই এখন অনেক বেশি…মাশরাফি বিন মুর্তজা: যে কন্ডিশনে ওখানে খেলেছি, তাতে বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজটা আমাদের অনেক কাজে লাগবে। আত্মবিশ্বাসের কথা যদি বলেন, যেকোনো জয় থেকেই তা পাওয়া যায়। ওখানে, বিশেষ করে, আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে যে তিনটি ম্যাচ জিতেছি, হয়তো বিশ্বকাপে ওরা আরও শক্তিশালী হয়ে আসবে, তবু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই আমাদের জিততে হয়েছে।

প্রশ্ন: বিশ্বকাপের আগে প্রথম শিরোপা জিতল বাংলাদেশ দল, এটা নিশ্চয়ই বাড়তি কিছু? 
মাশরাফি: অবশ্যই, এটা তো বিশ্বকাপে বাড়তি প্রেরণা হবেই। তা ছাড়া শেষ ম্যাচটা আমরা যে কন্ডিশনে খেললাম, আমার ধারণা, ইংল্যান্ডের উইকেট, আবহাওয়াও অনেকটা ও রকমই থাকবে। তবে ত্রিদেশীয় সিরিজ আর বিশ্বকাপ এক নয়। যেটা বললাম, ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও বিশ্বকাপে অন্য রকম দেখবেন। টুর্নামেন্টের সব দলই এখানে শক্তিশালী। সবাই ভালো খেলতে চাইবে। এটা ঠিক বিশ্বকাপের আগে আমরা আয়ারল্যান্ডে ভালো খেলে এসেছি, শিরোপা জিতেছি, এগুলো দলকে অনুপ্রাণিত করবে। তবে বিশ্বকাপ নতুন টুর্নামেন্ট। সেখানে প্রথম থেকেই শুরু করতে হবে।

প্রশ্ন: সৌম্য, লিটন, মোসাদ্দেকের পারফরম্যান্সকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? বিশ্বকাপের আগে তাঁদের কাছ থেকে এ রকম পারফরম্যান্সই নিশ্চয়ই আশা করেছিলেন। 
মাশরাফি: দেখুন, আমি কাউকে আলাদা করব না। সবাই ফর্মে আছে, রান করছে, এটাই বড় কথা। হ্যাঁ, ত্রিদেশীয় সিরিজের পারফরম্যান্স তাদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে। কিন্তু বিশ্বকাপে আমাদের ভালো কিছু করতে হলে সবাইকেই ভালো খেলতে হবে। তামিম, সাকিব, মুশফিকসহ সিনিয়ররাও সবাই ভালো করছে। এখন বিশ্বকাপে আমাদের সবাইকে এই ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখতে হবে। এত বড় একটা টুর্নামেন্ট, এতগুলো ম্যাচ। শুধু এক-দুজন ভালো খেললে হবে না।

প্রশ্ন: বোলিং নিয়ে কি কোনো দুশ্চিন্তা আছে? বিশেষ করে মোস্তাফিজের বোলিং…
মাশরাফি: একদমই না। আয়ারল্যান্ডে বোলিং যেটুকু খারাপ হয়েছে, সবারই খারাপ হয়েছে। মোস্তাফিজ একা খারাপ বোলিং করেনি। আর এটা হতেই পারে। একটা সিরিজ বা টুর্নামেন্টে সবাই ভালো খেলবে না। খারাপ পারফরম্যান্স হতেই পারে, সেখান থেকে আবার ফিরেও আসতে হবে। আমি তো মনে করি, বিশ্বকাপ সেই ফিরে আসার সবচেয়ে ভালো সুযোগ।

প্রশ্ন: বিশ্বকাপটা অনেক বেশি রানের খেলা হবে বলা হচ্ছে। আপনার কি মনে হয়?
মাশরাফি: ইংল্যান্ডের উইকেটে এখন রান হয়, এটা আমরা জানি। বিশ্বকাপের সময় হয়তো গরমের কারণে উইকেট আরও শুকনো থাকবে। প্রচুর রান হতেই পারে। তবে সেটা সবার জন্যই। আমাদের যে ব্যাটসম্যানরা আছে, বড় রান আমাদের পক্ষেও করা সম্ভব। অনেকে বলছেন, ৩৫০ রান তাড়া করে জিততে হবে। আমি মনে করি না প্রতি ম্যাচেই এ রকম হবে। ২৮০-৩০০ রান করেও ওখানে কোনো দল জিততে পারে। ৩২০-৩৩০ রান হবে ফাইটিং স্কোর।

প্রশ্ন: সেমিফাইনালের আগে লিগ পর্বে ৯টি ম্যাচ খেলতে হবে সব দলকে। বাংলাদেশ দলের জন্য এই ফরম্যাট কতটা চ্যালেঞ্জিং? 
মাশরাফি: আমাদের মতো দলের জন্য ৯টি ম্যাচ টানা ভালো খেলা কঠিন। শুরুর দিকে এক-দুটি ম্যাচ জিতে গেলে হয়তো আমরা ভালো কিছু আশা করতে পারব। তবে আমাদের প্রথম দুটি ম্যাচই কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। প্রথম দুই-তিনটি ম্যাচ হেরে গেলে সেমিফাইনালে যেতে আমাদের পরের প্রায় সব ম্যাচ জিততে হবে। তখন কাজটা আরও কঠিন হয়ে যাবে। অনেকে বলছেন, পাঁচটি ম্যাচ জিতলেই নাকি সেমিফাইনালে ওঠা যাবে। কিন্তু আমার ধারণা, সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে হলে অন্তত ছয়টি ম্যাচ জিততে হবে।

প্রশ্ন: আপনাদের লক্ষ্যও তো সেমিফাইনালে খেলাই…
মাশরাফি: প্রাথমিক লক্ষ্য সেটা। আমরা সেমিফাইনালে খেলতে চাই। কিন্তু আবারও বলছি, কাজটা সহজ নয়। কারণ, বিশ্বকাপে সবাই কঠিন প্রতিপক্ষ। আবার যদি সেমিফাইনালে উঠেই যাই, ফাইনালই-বা কেন খেলব না!

প্রশ্ন: সবাই তো ইংল্যান্ড, ভারত আর অস্ট্রেলিয়াকে ফেবারিট বলছে। আপনার ফেবারিট কারা? 
মাশরাফি: এই তিন দলেরই সম্ভাবনা আছে। তবে আমার চোখে ভারত আর অস্ট্রেলিয়া কিছুটা এগিয়ে। আর যদি বলেন বাংলাদেশের কথা, আমি বলব আমাদেরও সম্ভাবনা আছে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতলে সেটা কি অঘটন হবে? 
মাশরাফি: অনেকে অনেক কথা বলতে পারেন। অনেকের অনেক মত থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন, আমি বলব, বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতলে সেটা অঘটন হবে না।

প্রশ্ন: আপনার তো এটাই শেষ বিশ্বকাপ। বাংলাদেশের জন্য বিশ্বকাপটা কেমন হলে ভালো একটা স্মৃতি নিয়ে যেতে পারবেন? 
মাশরাফি: সেমিফাইনালের লক্ষ্যের কথা তো আগেই বললাম। আরও ভালো কিছু করতে পারলে তো আরও ভালো হয়। ব্যক্তিগতভাবে যার যার জায়গা থেকে সবাই দলের জন্য অবদান রাখুক, এটাই চাই।

প্রশ্ন: শেষ প্রশ্ন, ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া আছে এই বিশ্বকাপে? 
মাশরাফি: না, ব্যক্তিগত কিছু চাওয়ার নেই। সে রকম কোনো লক্ষ্যও স্থির করিনি। বাংলাদেশ ভালো খেললেই আমি খুশি।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security