স্টাফ রিপোর্টারঃ আমি ভালো নেই, আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম এমনই আর্তনাদ মৎস্য খামারি মমিন ফিসারিস এন্ড এগ্রো লিমিটেডের সত্বাধিকারি আব্দুল আলিমের। তিনি বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আমার খামার তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আমার বাড়িতে থাকা অফিসিয়াল কাগজপত্র, ব্যাংকের দলিলসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে এমনটি দাবি করছেন মৎস্য খামারি আব্দুল আলিম। তিনি বলেন দুই দফার বন্যায় আমার খামারের ৪৫ লক্ষাধিক টাকার মাছ ভেসে গেছে। সুনামগঞ্জে ২য় দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মৎস্য খামারিদের। পরপর দু’দফা বন্যায় পুকুরের মাছ ও পোনা মাছ ভেসে গিয়ে চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন মৎস্য খামারিরা। ছোট ছোট এই খামারিরা পথে বসার উপক্রম। জানা যায়, অবকাঠামোসহ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এক হাজার কোটি টাকার। পানি নেমে গেলে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়। জেলা মৎস্য অফিস জানায়, বন্যায় সমগ্র জেলায় ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ২৫ হাজার, জেলা প্রশাসনের ২০টি ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের ১৫৩টি পুকুর বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব পুকুর থেকে ৩০ হাজার মে. টন মাছ এবং ১০ কোটি পিস পোনা মাছ ভেসে গেছে। টাকার অংকে ক্ষতি হয়েছে এক হাজার কোটি টাকার। এরমধ্যে একশত কোটি টাকার অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। সূত্র মতে, জেলার ১২টি উপজেলার সবক’টি উপজেলার মৎস্য খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মৎস্য খামারিরা মাছ রক্ষার জন্য পুকুরের চারিদিকে জাল টানিয়ে দেয়। কিন্তু পানি এতোবেশি বাড়ে যে জালের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে আর কোনো মাছ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। জেলার এক সময়ের শ্রেষ্ঠ মৎস্য খামারি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ছাতারকোনা গ্রামের নুরুল আলম সাগর। তিনি বলেন, বন্যার আগে একদিন খামার থেকে মাছ বিক্রি করেছি। প্রায় একমাস মাছ বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু বন্যায় ভেসে যায় সব মাছ। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর গ্রামে আল-আমিন ব্রাদার্স মৎস্য হাচারির মালিক আশরাফুর হক বলেন, আমার এখানে রেনু থেকে পোনা মাছ উৎপাদন করি। বন্যায় প্রায় ১৫/১৬ লাখ টাকার পোনা মাছ ভেসে গেছে। ব্যাংক ঋণ নিয়ে হ্যাচারিটি করেছিলাম। এখন কীভাবে ব্যাংক ঋণ দেবো এই চিন্তায় আছি। সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের মর্ডান এগ্রো’র স্বত্বাধিকারী মুসলিম উদ্দিন বলেন, আমি সবই হারালাম।