শনিবার, এপ্রিল ১৩, ২০২৪

গাইবান্ধায় ভেজা ধান নিয়ে বিপাকে কৃষকরা

যা যা মিস করেছেন

তাসলিমুল হাসান সিয়াম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টিতে ঘরে তোলা ভেজা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গাইবান্ধার কৃষকরা। বোরো ধান মাড়াইয়ের এ ভরা মৌসুমে একদিকে ধানক্ষেতে বৃষ্টির পানি, অন্যদিকে বাড়িতে ওঠানো ভেজা ধান নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছেন তারা।

জানা গেছে, গাইবান্ধায় চলতি বোরো মৌসুমে ক্ষেতের পাকা ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন কৃষকরা। আবহাওয়াও ছিল অনেকটাই অনুকূলে। এরই মধ্যে গত ১২ মে থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। এতে জেলার প্রায় সব উপজেলায় ক্ষেতের পাকা ধান পানিতে তলিয়ে যায়। এসব ক্ষেতের ধান বাঁচাতে বেশি দামে কৃষিশ্রমিক নিয়ে হাঁটু পানিতে নেমে ধান কেটে ঘরে তোলেন অনেক কৃষক। কিন্তু ধান মাড়াইয়ের পর বৈরী আবহাওয়ায় ধান শুকাতে না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। আবার অনেক এলাকায় শ্রমিক সংকটে পানিতে তলিয়ে থাকা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না অনেক কৃষক।

কৃষকরা বলছেন, শ্রমিক সংকটের কারণে পানিতে তলিয়ে থাকা পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না তারা। আবার ঘরে তোলা ধান দু-এক দিনের মধ্যেই শুকাতে না পারলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। ধান শুকাতে না পারলে এবারের বোরো আবাদের ধারদেনার বোঝা বহন করতে হবে তাদের।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কৃষক মঞ্জুর মন্ডল বলেন, ‘টানা বৃষ্টির ফলে নিচু জমিতে লাগানো আমার ৩০ শতক জমির ধান পানিতে তলিয়ে ছিল। বেশি দামে শ্রমিক নিয়ে নিজে সঙ্গে থেকে কাজ করে ঘরে তুলেছি। কিন্তু রোদ না থাকায় শুকাতে পারছি না। দু-এক দিনের মধ্যে এসব ভেজা ধান শুকাতে না পারলে নষ্ট হয়ে যাবে। সব বৃথা হয়ে যাবে।’

পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহর পুর ইউনিয়নের কৃষক এলাকার কৃষক হযরত আলী বলেন, ‘আমার এক বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান লাগিয়েছি। ধান পেকে যাওয়ার পরও শ্রমিকের অভাবে ঘরে তুলতে পারছিলাম না। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তা তলিয়ে যায়। পরে বাড়তি টাকায় শ্রমিক দিয়ে ধান কেটে ঘরে তুললেও রোদ না থাকায় শুকাতে পারছি না। ধান নষ্ট হয়ে গেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে চলব, সেটা ভেবে পাচ্ছি না।’

এদিকে চারদিন থেকে বৈরী আবহাওয়ায় ঘরে তোলা ধান শুকাতে পারছেন না উঁচু এলাকার কৃষকরাও। তারা অর্ধেক জমির ধান ঘরে তুলতে পারলেও এখনো অর্ধেক জমির পাকা ধান ক্ষেতেই পড়ে আছে।

সদর উপজেলার আরিফ খাঁ গ্রামের কৃষক শামসুল বলেন, ‘দুই একর জমি আবাদ করেছি। এক একর জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছি। এর মধ্যেই বৃষ্টি শুরু হয়। ঘরে জমা রাখা কিছু ধান এখনো শুকাতে পারিনি। এ অবস্থায় ক্ষেতের বাকি ধানও ঘরে তুলতে পারছি না।’

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে জমির পাকা বোরো ধান কেটে ঘরে তোলা ও রোদে শুকানোর কাজে সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। এরই মধ্যে জেলার প্রায় ৯০ শতাংশ ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে। বৃষ্টিতে তেমন ক্ষতি হবে না। আশা করছি, বৃষ্টি কেটে গেলে কৃষকরা তাদের ধান কাটা-মাড়াই ও শুকানো শেষ করতে পারবেন।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security