নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ–পরিচালক (প্রশাসন) আয়েশা সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে আনিত দূর্নীতি, টেন্ডার এবং বদলী বানিজ্যের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ গুলো আমলে না নেয়ায় অধিদপ্তরে চরম হতাশা বিরাজ করছে ।
ডিডি আয়েশার বিরুদ্ধে করা প্রতিমন্ত্রী বরাবর একটি অভিযোগ পত্রের মাধ্যমে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ডিডি আয়শা প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার সেলাই মেশিন ক্রয়ের একটি টেন্ডার সরকারি ক্রয় নিতীমালা ভঙ্গ করে কোন সরকারি দপ্তরে শেলাই মেশিন সরবরাহের কাজের অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও তার পচ্ছন্দের প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দিয়েছেন।
অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার ফলে তারা কাজটি করতে পারছেন না এমনকি কাজটি না করেই সম্পূর্ন বিল পেয়ে গেছেন প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে দ্যা মেইল বিডি ডটকমে ৫ অক্টোবর ‘২০ রিপোর্ট করার পর আইওয়াশের জন্য কয়েকটি নিম্নমানের শেলাই মেশিন অধিদপ্তরে এনে রেখে দেয়া হয়েছে। কয়েকটি জেলার উপ-পরিচালকের সাথে কথা বলে জানা যায় গত অর্থ বছরে যে শেলাই মেশিন পাবার কথা তা এখনও পর্যন্ত তারা পাননি। তার সহায়তায় সরবরাহ না করেই ইতোমধ্যে বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, দরপত্র ছাড়াই বিপুল পরিমান দ্রব্য সামগ্রী ক্রয়ের মাধ্যমে ডিডি আয়েশা আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন । তিনি ঢাকা জেলার উপ-পরিচালক থাকা কালীন সময় ল্যাকট্রেটিং মাদার কর্মসূচির ভাতাভোগি নির্বাচনের নীতিমালা অনুসরণ না করে প্রতি সদস্যের থেকে ২-৩ হাজার টাকা আদায় করে ল্যাকটেটিং মাদার কর্মসূচির ফরম বিক্রি করেছেন এছাড়াও সমিতি রেজিস্ট্রেশন বাবদ ১৫-২০ হাজার টাকা করে নিয়ে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, অনেক ভুয়া সমিতির রেজিস্ট্রেশনের ঘটনারও নজির রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে।
অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীর নামে অফিস সহকারীর সহযোগীতায় বিল ভাউচার করে নিজে প্রচুর অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এনজিও গুলোর নিকট হতে পারফরমেন্স রিপোর্ট না দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে বিপুল পরিমান টাকা আদায় করেছেন । এছাড়াও অধিদপ্তরে যোগদান করার পরও ঢাকা জেলা অফিসের হয়ে তার নিজ স্বাক্ষরে বিপুল অংকের ভুয়া বিলের টাকা উত্তোলন মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ থেকে জানা যায় ।
অভিযোগের সূত্রধরে জানা যায়, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আয়েশা সিদ্দিকী, প্রধান কার্যালয়ে যোগদানের পর থেকে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ও মহাপরিচালকের নাম ভাঙ্গিয়ে চালিয়েছে সকল দূর্নীতি, টেন্ডার এবং বদলী বানিজ্যের স্বেচ্ছাচারীতা । উপ-পরিচালক কিছূ সংখ্যক কর্মচারীর সহযোগীতায় ব্যাক্তিগত আক্রোশ ও অন্যের প্ররোচনায় মন্ত্রণালয় এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের বিভিন্ন শাখায় কর্মরতদের অন্যায়ভাবে বদলীর মাধ্যমে ঘুষ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিব বরাবরে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।
সম্প্রতি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প ভিজিডি এর এনজিও নির্বাচনের দরপত্র আহব্বান ও গ্রহণ করা হয়েছে । ইতোমধ্যে ডিডি আয়েশা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে শতাধিক এনজিও’র নিকট হতে বিপুল পরিমান অর্থ আদায় করেছেন এবং পরকিল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তার পছন্দের কতকর্তাদের বদলি করে এই প্রকল্পে নিয়ে নিজের সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে ।
এ বিষয়ে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক আয়েশা সিদ্দিকীর নিকট টেলিফোনে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন।