বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

ফিনসেন ফাইল: শীর্ষ ব্যাংকগুলোর বেআইনি লেনদেন ফাঁস

যা যা মিস করেছেন

বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে ফিনান্সিয়াল ক্রাইমস ইনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্ক (ফিনসেন) ফাইল। বিশ্বের শীর্ষ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো সচেতনভাবেই মানি লন্ডারিং বা বেআইনি অর্থনৈতিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত – এ সংক্রান্ত আড়াই হাজার পাতার গোপন নথি ফাঁস করা হয়েছে ওই ফিনসেন ফাইলে। গত দুই দশকে বিপুল অংকের সন্দেহজনক তহবিল লেনদেন হওয়ার নতুন এক কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে এসেছে। তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের কয়েকটি ব্যাংকের নামও।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জোট ইন্টারন্যশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নলিস্টস-আইসিআইজে এই বিষয়ক তথ্য প্রকাশ করেছে তাদের ওয়েবসাইটে৷ ফিনসেন ফাইলস নামের এই নথিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যাংকের দুই ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্য রয়েছে৷ সেগুলো ঘটেছিল ১৯৯৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে৷ যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারি বা আর্থিক দপ্তরের ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কের কাছে নিয়ম অনুযায়ী এসব সন্দেহজনক অবৈধ অর্থ লেনদেনের বিষয়ে প্রতিবেদন দিয়েছিল৷

এই টাকা কোথা থেকে কোথায় স্থানান্তর হয়েছিল তার ১৮ হাজার ১৫৩ টি নমুনা ওয়েবসাইটে আলাদাভাবে দেখিয়েছে আইসিআইজে৷ এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া এবং বাংলাদেশে আসা আটটি লেনদেনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে৷ এই লেনদেনগুলো হয়েছিল ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালে, যার পরিমাণ আট লাখ ৩২ হাজার ৯৩৭ ডলার৷ টাকার অঙ্ক যা সাত কোটির বেশি৷  এর মধ্যে অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে এসেছে তিন লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৩ ডলার, যার তিন লাখ ৩৬ হাজার ১৩৩ ডলারই ঢুকেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের অ্যাকাউন্টে৷ অস্ট্রেলিয়া অ্যান্ড নিউজিল্যান্ড ব্যাংকিং (এএনজেড) থেকে এই টাকা এসেছে৷ টাকা স্থানান্তর হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট থেকে ০১ সেপ্টেম্বরে৷

লেনদেনগুলো সম্পন্ন হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক মেলন কর্পোরেশনের মাধ্যমে৷ তারাই এই লেনদেনের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের অর্থ পাচার প্রতিরোধ বিভাগকে অবহিত করে৷ এছাড়াও সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকের ১৬০০ ডলারের আরেকটি লেনদেনের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিল স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড৷ ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল লাটভিয়ার একটি ব্যাংক থেকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড হয়ে ওই টাকা সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকে এসেছিল৷

অন্যদিকে চারটি পৃথক ট্রানজেকশন বা লেনদেনে বাংলাদেশের রুপালি ব্যাংক থেকে জার্মানির ডয়চে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে চার লাখ ৯৫ হাজার ডলার স্থানান্তর হয়েছিল৷ এই লেনদেনটি হয়েছে ২০১৬ সালের ১৫ ও ২২ সেপ্টেম্বর৷ এই সম্পর্কেও ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কের কাছে রিপোর্ট করেছিল স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড৷

আইসিআইজের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাজফিড নিউজের হাতে প্রথম এই নথি আসে৷ পরবর্তীতে সেটি তারা আইসিআইজেকে দেয়৷ জোটের ৪০০-র বেশি সাংবাদিক ১৬ মাস ধরে এসব তথ্য ধরে অর্থ পাচার বিষয়ক অনুসন্ধান চালিয়েছেন৷ আইসিআইজে বলছে, এই নথির দুই ট্রিলিয়ন ডলারের তথ্য বিশ্বজুড়ে যে অবৈধ লেনদেনের বন্যা বইছে তার একটি ফোঁটা মাত্র৷ শুধু ২০১১ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কের কাছে মোট যত রিপোর্ট হয়েছে, তার তুলনায় এটি দশমিক শূন্য দুই ভাগ৷

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security