বুধবার, মে ১, ২০২৪

শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান সবার জন্য অভিন্ন: কাদের

যা যা মিস করেছেন

অন্যায়-অনিয়মে জড়িয়ে না পড়তে ছাত্রলীগকে নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সরকারের অগ্রযাত্রায় নিজেদের সুনাম ধরে রাখতে ছাত্রলীগকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট করবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনও অন্যায় অনিয়মে জড়িয়ে পড়া নয়। অন্যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান সবার জন্য অভিন্ন বার্তা বহন করছে।’

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কার্যালয় অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আখতারুজ্জামান, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন।

১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ওই সময় বিদেশে ছিলেন বলেই বেঁচে যান আমাদের নির্ভরতার ঠিকানা, আস্থার বাতিঘর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর আরেক সুযোগ্য কন্যা শেখ রেহানা। ১৯৮১ সালে আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা, উচ্ছ্বাস, আবেগ দিয়ে বরণ করেছিলাম। প্রকৃতিও সেদিন অঝোর ধারায় ঝরছিল বঙ্গবন্ধুর প্রিয় কন্যাকে পেয়ে। প্রতিকূলতার স্রোত মাড়িয়ে, ইতিহাসের নানান বাঁক পেরিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও রক্তের উত্তরাধিকার ফিরে আসেন মুজিবহীন মুজিবের বাংলাদেশে। শুরু করেন দল গোছানোর কাজ। গড়ে করে তোলেন দলীয় ঐক্য। গড়ে তোলেন জাতীয় ঐক্য। স্বজন হারানোর বেদনাকে তিনি শক্তিতে রূপান্তর করেন। মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার মাধ্যমে খুঁজে নেন প্রিয়জন হারানোর বেদনা।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা আছেন বলেই ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। জাতির কলঙ্ক মোচন হয়েছে। তিনি আছেন বলেই যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে। পাপের বোঝা থেকে জাতি মুক্ত হয়েছে। তিনি শুধু স্বপ্ন দেখাননি, দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে স্বপ্ন আকাশের সীমানা পেরিয়ে আকাশে পৌঁছাতে হয়। তারই নেতৃত্বে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ির অপপ্রচার থেকে বেরিয়ে আজ উদীয়মান অর্থনৈতিক পরাশক্তি। বাংলাদেশে আজ পারমাণবিক যুগে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বারবার মৃত্যুর হাত থেকে, ষড়যন্ত্রের নীলনকশা থেকে বেঁচে ফেরা শেখ হাসিনা এক মৃত্যুঞ্জয়ী বীর। তিনি ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে উড়ান সৃষ্টির পতাকা। তিনি মরণের মিছিলে দাঁড়িয়ে জয়গান গান জীবনের। তার সাহসী, পরিশ্রমী, মানবিক নেতৃত্ব জেগে আছে বলেই বাংলাদেশ ঘুমাতে পারে। তার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল।’

জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিল মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘অথচ তারা আজ অপপ্রচার চালায় দেশে ন্যায়বিচার নেই। ন্যায়বিচার তো দূরের কথা, ২১ বছর আমরা বিচার চাইতেই পারিনি। এই অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আজ মানবাধিকারের বুলি আওড়ায়। কারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল? যার প্রাইম টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।’

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা সত্য উচ্চারণ করলে মির্জা ফখরুল সাহেবরা বলেন, জেনারেল জিয়াকে ছোট করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নিরাপদে দেশ থেকে সরে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছিল কে? কে খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে? মুজিব হত্যার বেনিফিশিয়ারি জিয়াকে খন্দকার মোশতাক প্রধান সেনাপতি বানিয়েছিল। আমরা কথা বললে নাকি জিয়াউর রহমানকে ছোট করা হয়? খুনি এবং খুনের মদতদাতাকেও ইতিহাসের কাঠগড়ায় জবাবদিহি করতে হবে।’

বিএনপি এবং দুর্নীতি শব্দ দুটি সমার্থক মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়েও কথা বলে। তাদের সময় দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। দুর্নীতিকে তারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে ৭ নম্বর ধারা বাতিল করে আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে তারা নিজেদের স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের মুখে অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে কথা বলা আর ভূতের মুখে রাম রাম একই কথা।’

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে সংগঠনটি সাবেক সভাপতি কাদের বলেন, ‘হত্যা ও ষড়যন্ত্রের কুশীলবরা এখনও আছে। এখনও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। উন্নয়নবিরোধী অপশক্তি এখনও চারপাশে মাথা লুকিয়ে আছে। উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এখনও সুযোগ খুঁজছে। তারা উন্নয়ন, শান্তি ও স্বস্তির বাংলাদেশ চায় না। এ দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় নিয়ে যেতে চায়। চায় সংঘাতে জর্জরিত রক্তময় প্রান্তর। সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ করতে চায়। চায় ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পুরনো সুযোগ। কিন্তু যতক্ষণ শেখ হাসিনা আছেন, ছাত্রলীগের তরুণরা আছে, ততক্ষণ কোনও ষড়যন্ত্রই হালে পানি পাবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধ আগামী বিনির্মাণের অগ্রযাত্রা এগিয়ে যাবেই।’

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security